শাওন বল, মাদারীপুর প্রতিনিধিঃ
মাদারীপুরের রাজৈরে পুলিশ হেফাজতে তিন যুবককে নির্যাতনের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সঞ্জয় কুমার ঘোষসহ সংশ্লিষ্ট পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে পুলিশ সুপারকে এ ঘটনায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, গত ১৭ সেপ্টেম্বর রাতে রাজৈর পৌরসভার স্বমঙ্গল এলাকায় মাদকবিরোধী অভিযানে নেতৃত্ব দেন পরিদর্শক সঞ্জয় কুমার ঘোষ। এ সময় এসআই তরিকুল ইসলাম, এসআই এএইচএম কামরুজ্জামান, এএসআই জাহিদুল ইসলামসহ অন্য সদস্যরা ভ্রাম্যমাণ ফল বিক্রেতা ইলিয়াস খালাসি, প্রবাসী সুজন মোল্লা এবং স-মিল শ্রমিক সুমন খাঁকে আটক করেন। পুলিশ দাবি করে, তাদের কাছ থেকে ৫০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয় এবং পরদিন তাদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করে আদালতে পাঠানো হয়।
তবে আটক যুবকদের পক্ষ থেকে অভিযোগ ওঠে, থানায় নিয়ে শারীরিক নির্যাতনের শিকার করা হয়েছে তাদের। অভিযোগ অনুযায়ী, ইলিয়াস খালাসির বাম হাতের কবজি থেকে কনুই পর্যন্ত পিস্তলের বাট দিয়ে আঘাত করা হয় এবং বাম পায়ের উরুতে বুটের লাথি মারা হয়। আদালতে হাজিরের সময় বিচারক আসামিদের শরীরে দৃশ্যমান জখম দেখতে পেয়ে জেলা সিভিল সার্জনকে তাৎক্ষণিক চিকিৎসার ব্যবস্থা এবং ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মেডিকেল রিপোর্ট দাখিলের নির্দেশ দেন।
পরবর্তীতে সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ শরিফুল আবেদীন কমলের মেডিকেল রিপোর্টে নির্যাতনের সত্যতা পাওয়া গেলে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. এলিয়াম হোসেন গত ২৫ সেপ্টেম্বর অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা করার নির্দেশ দেন।
বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তারা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করে রিভিশন আবেদন করেছেন। আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর এ বিষয়ে শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে।
এদিকে, রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) ভুক্তভোগীদের পরিবার বিচার দাবি করে দ্রুত দোষীদের শাস্তির দাবি জানিয়েছে। মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনের এ ধরনের ঘটনা আইনের শাসনকে প্রশ্নবিদ্ধ করে এবং অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনা না হলে এর পুনরাবৃত্তি ঘটবে।