আমির ফয়সাল, জাবি প্রতিনিধিঃ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘জলসিঁড়ি’ আজ(২৫ সেপ্টেম্বর) ২৩ বছরে পদার্পন করেছে।‘জলসিঁড়ি’ সাংস্কৃতিক সংগঠনটি ২০০২ সালের এই দিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চে একটি ছোট্ট সঙ্গীতানুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে আত্মপ্রকাশ করে।
প্রতিষ্ঠার শুরুর সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ছিল শান্ত ও স্নিগ্ধ। শিশির ভেজা শিউলি ফুলের সৌরভ, ঝিরঝিরে হাওয়া এবং সঙ্গীতের আবেশে সেদিন নতুন স্বপ্ন নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিল ‘জলসিঁড়ি’। নাম নির্ধারণের জন্য কিছুদিন অপেক্ষা করতে হলেও অবশেষে ‘জলসিঁড়ি’ নামেই আত্মপ্রকাশ করে সংগঠনটি। তাদের মূল স্লোগান ছিল— “আমরা শ্রম ও মেধায় বাবুই পাখির মতো সৃষ্টিশীল হতে চাই।” পাশাপাশি ট্যাগলাইন গ্রহণ করা হয়— “জলসিঁড়ি— একটি মননশীল শিল্পচর্চা কেন্দ্র।”
সংগঠনের আত্মপ্রকাশের সময়েই লেখা হয়েছিল এর থিম সং—
“আমাদের কলরবে,
মুখরিত হয় যদি তোমাদের মন—
হৃদয়ের দাবি নিয়ে জলসিঁড়ি’র
এই আয়োজন॥ (অংশবিশেষ)”
প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই সংগঠনটি অনন্য বৈশিষ্ট্য নিয়ে পথচলা শুরু করে। যেখানে অন্য সংগঠনগুলো নির্দিষ্ট বিষয়ে কাজ করছিল, সেখানে জলসিঁড়ি ঘোষণা দেয় যে তারা শিল্পকলার সকল শাখা— নাটক, গান, লিটল-ম্যাগাজিন, আবৃত্তি, চিত্রকলা এবং নৃত্যকলা— সবকিছু নিয়েই কাজ করবে।
কর্মীদের নিবেদিত প্রচেষ্টায় ‘জলসিঁড়ি’ হয়ে ওঠে এক শুদ্ধ শিল্পচর্চার কেন্দ্র। ক্যাম্পাসে টিকিটের বিনিময়ে গান ও নাটক দেখার ব্যবস্থা, হাতে আঁকা পোস্টারের মাধ্যমে প্রচারণা এবং প্রেজেন্টেশনে অভিনবত্ব আনার মাধ্যমে সংগঠনটি নিজস্ব অবস্থান তৈরি করে নেয়।
২৩ বছরের দীর্ঘ পথচলায় ‘জলসিঁড়ি’ গড়ে তুলেছে অসংখ্য কর্মী, যারা সংগঠনকে সমৃদ্ধ করেছেন পাশাপাশি নিজেরাও হয়েছেন আত্মপ্রত্যয়ী। সংগঠনের সদস্যরা বিশ্বাস করেন, বিভাগের সীমা ছাড়িয়ে শিক্ষার্থীরা সাংস্কৃতিক চর্চায় অনুপ্রাণিত হবেন এবং বাঙালিয়ানার আবেশ ছড়িয়ে দেবেন দেশ থেকে দেশান্তরে।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানিয়ে সংগঠনের বর্তমান নেতৃবৃন্দ আশা প্রকাশ করেছেন, আগামীতেও ‘জলসিঁড়ি’ তার শুদ্ধ শিল্পচর্চা ও সৃজনশীল কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়কে মুখরিত করে রাখবে।