কুয়েট প্রতিনিধিঃ
২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ (সোমবার): খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) গত ১৮ ফেব্রুয়ারির সংঘর্ষ ও শিক্ষক লাঞ্ছিতের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ৫ শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার করা হয়েছে। একই ঘটনায় আরও ৩২ শিক্ষার্থীকে কঠোরভাবে সতর্ক করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটির বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও, সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) চিঠি দেওয়ার পর বিষয়টি প্রকাশ পায়।
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক বিএম ইকরামুল হক এ সিদ্ধান্তের কথা নিশ্চিত করে বলেন, পাঁচ শিক্ষার্থীর মধ্যে এমএসসির শিক্ষার্থী সালিম সাদমানকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। বাকি চারজনকে ছয় মাসের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে, তারা হলেন— লেদার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ২৩ ব্যাচের ওমর বিন হোসাইন, টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ২১ ব্যাচের শান্ত ইসলাম, টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মো. হৃদয় এবং ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ২২ ব্যাচের সাফওয়ান আহমেদ ইফাজ।
এছাড়া, আরও ৩২ শিক্ষার্থীকে সতর্ক করে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ছাত্র রাজনীতি বন্ধের দাবিতে কুয়েটে সাধারণ শিক্ষার্থী এবং ছাত্রদল নেতাকর্মী ও বহিরাগতদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। সংঘর্ষের পর শিক্ষার্থীরা তৎকালীন উপাচার্যসহ কয়েকজন শিক্ষককে লাঞ্ছিত করেন। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ ছিল, শিক্ষকরা হামলাকারীদের পক্ষ নিয়েছিলেন।
ঘটনার তদন্তে কম্পিউটার সাইন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. এম এ এ হাশেমের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি গত ১৪ এপ্রিল তাদের প্রতিবেদন জমা দেয়।
তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি সিন্ডিকেট সভায় ৩৭ শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত হয়েছিল, তবে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ২৩ এপ্রিল সেই বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়। আন্দোলনের জেরে তৎকালীন উপাচার্য ও সহ-উপাচার্যকেও পদত্যাগ করতে হয়।
দীর্ঘ প্রায় সাড়ে পাঁচ মাস বন্ধ থাকার পর গত ২৯ জুলাই কুয়েটে আবার একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয়। নতুন উপাচার্য অধ্যাপক মো. মাকসুদ হেলালীর নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবার ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটির মাধ্যমে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিল।
ছাত্রশৃঙ্খলা কমিটি ২৫ থেকে ২৭ আগস্ট এবং ২১ সেপ্টেম্বর— এই তিন দিন তদন্ত প্রতিবেদন, ভিডিও ফুটেজ এবং কারণ দর্শানোর নোটিশ পর্যালোচনা করে এই শাস্তির সিদ্ধান্ত নিয়েছে।