মোঃ অনিক চৌধুরী, মুরাদনগর (কুমিল্লা) প্রতিনিধি :
মুরাদনগরে নিখোঁজের ৩৮ দিন পর মেহেদী হাসান (১৮) নামের এক অটোরিকশা চালকের কঙ্কাল উদ্ধার করেছে পুলিশ।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে উপজেলার নবীপুর পশ্চিম ইউনিয়নের উত্তর ত্রিশ এলাকার মক্কা ব্রিক্স সংলগ্ন গোমতী নদীর বেড়িবাঁধের ভেতরের একটি ঝোপ থেকে মাথার খুলি ও হাড়গোড় উদ্ধার করে বাঙ্গরা বাজার থানা পুলিশ।
নিহত মেহেদী হাসান বাঙ্গরা বাজার থানার দীঘিরপাড় গ্রামের মৃত মোস্তফার ছেলে। পেশায় তিনি অটোরিকশা চালক ছিলেন। এ ঘটনায় জড়িত ঘাতক খাইরুল ইসলাম (২১) কে নারায়ণগঞ্জের বন্দর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ১১ আগস্ট রাতে বাঙ্গরা বাজার থেকে অটোরিকশা নিয়ে কোম্পানীগঞ্জের উদ্দেশ্যে বের হওয়ার পর থেকে মেহেদী নিখোঁজ হন। পরদিন তার পরিবার থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করেন। পরে কোন খোঁজ না পেয়ে ২০ আগস্ট নিহতের মা জোসনা বেগম বাদী হয়ে একই গ্রামের আইনুল হকের ছেলে খাইরুলকে আসামি করে বাঙ্গরা বাজার থানায় হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণের মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই নাহিদ হাসান জানান, তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় তদন্ত এগিয়ে নিয়ে প্রথমে খাইরুলের বাবা আইনুল হককে রাঙ্গামাটি জেলার কাউখালি এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরবর্তীতে আইনুল হকের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে তার ভাই ফুল মিয়াকে কুমিল্লার অশোকতলা থেকে আটক করা হয়। ফুল মিয়ার দেয়া তথ্যে কুমিল্লার একটি গ্যারেজ থেকে নিখোঁজ অটোরিকশাটি উদ্ধার করা সম্ভব হয়।
এদিকে প্রধান আসামি খাইরুলকে গ্রেপ্তারে দেশের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালায় পুলিশ। অবশেষে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মঙ্গলবার রাত ১১টায় নারায়ণগঞ্জ জেলার বন্দর থানার সালা পাগলার মাজার এলাকা থেকে খাইরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার দেখানো স্থানে গিয়ে বুধবার বিকেলে নিহত মেহেদীর কঙ্কাল উদ্ধার করা হয়।
তদন্ত কর্মকর্তা আরো জানান, খাইরুলকে কুমিল্লা আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে আদালত ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।
বাঙ্গরা বাজার থানার ওসি মাহফুজুর রহমান বলেন, “প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামি খাইরুল হত্যার কথা স্বীকার করেছে। তার দেখানো স্থান থেকেই কঙ্কাল উদ্ধার করা হয়। ঘটনাস্থলে থাকা কাপড়ের মাধ্যমে ভিকটিমকে শনাক্ত করেন নিহতের পরিবারের সদস্যরা। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার ও অটোরিকশা উদ্ধার করা হয়েছে। আরও কেউ জড়িত আছে কিনা তা জানতে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।”