সানজানা তালুকদার, কুবি প্রতিনিধি:
গাউছিয়া কমিটি বাংলাদেশ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার উদ্যোগে ঈদে মিলাদুন নবী উপলক্ষে রাহমাতুল্লিল আলামীন কনফারেন্স ও নবী বন্দনা অনুষ্ঠিত হয় ।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয়।
আসরের নামাজের পর প্রধান আলোচক শায়েখ আব্দুল মোস্তফা রহিম আল আজহারী (খতিব, গাউছুল আজম জামে মসজিদ, ঢাকা) বক্তব্যের মাধ্যমে অনুষ্ঠানটি শুরু হয়। অতঃপর মাগরিবের নামাজের পর থেকে এশার আজান পর্যন্ত নাতে রাসুল পরিবেশনা চলে। এশার নামাজ ও মিলাদের মধ্য দিয়ে সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।
বিশেষ আলোচক হিসেবে ছিলেন সোহাগ উদ্দীন আল কাদ্বেরী( খতিব, কুমিল্লা কালেক্টর জামে মসজিদ) ও মোহাম্মদ জাবের হোসাইন (সভাপতি, জাগরণ মানবিক ফাউন্ডেশন)। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মোহাম্মদ মাকসুদুল করিম ( সহযোগী অধ্যাপক, ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগ,কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়)। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন মোঃ রায়হান উদ্দিন ( সভাপতি, গাউসিয়া কমিটি বাংলাদেশ, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা)। সঞ্চালনায় ছিলেন মোহাম্মদ মাইনুল হাসান।
অনুষ্ঠানে নাতে রাসুল পরিবেশ করেন শায়ের মহিউদ্দিন তানভীর, শায়ের তানভীর হোসাইন তারেক ও শায়ের সায়মুন রেজা কাদ্বেরী। মাওলানা মুফতী ইব্রাহিম আল কাদ্বেরী ( খতিব, কুমিল্লা কান্দিরপাড় ঈদগাহ জামে মসজিদ) আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শেষ করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক শায়েখ আব্দুল মোস্তফা রহিম আল আজহারী বলেন, 'নবী করীম (সাঃ)-এর জন্ম, আগমন ও আগমনের মূল কাহিনী আমাদের জন্য গভীর তাৎপর্য বহন করে। তাঁর জন্মের পর যেসব মৌজেজা প্রকাশ পেয়েছিল, সেগুলো মানবজাতির জন্য ছিল দিশারী আলো।'
তিনি আরও বলেন, 'রাসুলুল্লাহ্ (সাঃ)-এর আদর্শ ও গুণাবলী যদি আমরা আমাদের জীবনের মানবিক, চারিত্রিক ও নৈতিক দিকগুলোতে অনুসরণ করি, তবে পৃথিবীকে একটি সুন্দর ও নৈতিক জায়গায় রূপান্তর করা সম্ভব।'
তিনি জোর দিয়ে বলেন, 'নবী করীম (সাঃ) কখনো অন্য ধর্মকে আঘাত করেননি। বরং তাঁর সুন্দর আচরণ, দাওয়াত এবং ইসলামের সৌন্দর্য তুলে ধরে তিনি মানুষের হৃদয়ে ইসলামের বার্তা পৌঁছে দিয়েছেন।'
শেষে তিনি সবাইকে উদ্দেশ্য করে বলেন, “যদি আমরা নবী করীম (সাঃ)-এর আদর্শকে নিজেদের জীবনে ধারণ করতে পারি, তবে ন্যায়, সৌহার্দ্য ও নৈতিকতার ভিত্তিতে একটি সুন্দর পৃথিবী গড়ে তোলা সম্ভব হবে।'
বিশেষ অতিথি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ মাকসুদুল করিম বলেন, ' আলহামদুলিল্লাহ, গত বছর আমি আসতে পারিনি, কিন্তু এ বছর আল্লাহর তৌফিকেই আজকের এই মাহফিলে উপস্থিত হতে পেরেছি। আমি নিজেকে একজন ক্ষুদ্র নবীপ্রেমিক মনে করি, আর গাউসিয়া কমিটির পাশে থেকে যতটুকু পারি সাহায্য করার চেষ্টা করেছি, যদিও সেটা খুব সামান্য। সত্যি বলতে রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা করে নবীপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে এখানে যারা এসেছেন, তারা-ই আসলেই সৌভাগ্যবান। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ এত মানুষের উপস্থিতি আমাকে অভিভূত করেছে। শায়েখ আব্দুল মোস্তফা রহিম আল আজহারীর প্রাণবন্ত বক্তব্য আমরা সবাই মন ভরে উপভোগ করেছি। আমি আশা করি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় গাউসিয়া কমিটি ভবিষ্যতে আরও বিস্তৃতভাবে কাজ করবে এবং আমরা সবাই নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নাহ অনুসরণ করে জীবন পরিচালনা করব। আপনাদের সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ, আর আমি দোয়া করি মহান আল্লাহ তাআলা আমাদের এই আয়োজনকে কবুল করে নিন।'