কুয়েট প্রতিনিধিঃ
১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ (শুক্রবার): নিজেদের তিন দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) খুলনার শিববাড়ি মোড়ে এক বিভাগীয় মহাসমাবেশ করেছেন প্রকৌশল শিক্ষার্থীরা।
প্রকৌশলী অধিকার আন্দোলন’-এর ব্যানারে অনুষ্ঠিত এই সমাবেশে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন অব বাংলাদেশের (আইইবি) প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
বিকেল ৪টায় শুরু হওয়া এই সমাবেশে বক্তারা প্রকৌশল খাতে চলমান বৈষম্য নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট), খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা মেডিকেল কলেজ, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং খুলনার সকল বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
সমাবেশে প্রকৌশলী অধিকার আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাকিবুল হক লিপু বলেন, "ডিপ্লোমাধারীরা মূলত এইচএসসি সমমান। তারা টেকনিশিয়ান হিসেবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে প্রবেশ করলেও একটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ১০ম গ্রেডে শতভাগ এবং নবম গ্রেডে ৩৩ থেকে শতভাগ পর্যন্ত কোটা নিয়ে প্রকৌশল খাত দখল করে রেখেছে।" তিনি আরও বলেন, বিসিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য ন্যূনতম স্নাতক ডিগ্রি না থাকা সত্ত্বেও শুধুমাত্র পদোন্নতির মাধ্যমে তারা ক্যাডার হয়ে যাচ্ছে।
কুয়েট শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ফারুক হোসেন বলেন, "যদি দেশে আসলেই কোটা প্রথা বিলুপ্ত হতো, তাহলে মেধাবী শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা ছেড়ে এভাবে রাস্তায় নামতে হতো না।" তিনি অভিযোগ করেন যে একটি স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী ষড়যন্ত্র করে প্রকৌশল পেশাকে কলুষিত করছে এবং দেশের উন্নয়নে বাধা সৃষ্টি করছে। কুয়েট শিক্ষক সমিতি শিক্ষার্থীদের এই যৌক্তিক আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়েছে।
কুয়েটের প্রকৌশলী অধিকার আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক রাহাতুল ইসলাম বলেন, "আমরা দীর্ঘদিন ধরে শান্তিপূর্ণভাবে তিন দফা দাবি নিয়ে আন্দোলন করছি, কিন্তু দুঃখজনকভাবে আমাদের দাবি এখনো আদায় হয়নি। তারই ধারাবাহিকতায় আমরা এই বিভাগীয় মহাসমাবেশ আয়োজন করেছি।" তিনি জানান, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তাদের আন্দোলন চলবে।
প্রকৌশলী শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবিগুলো হলোঃ
১.*সহকারী প্রকৌশলী পদে নিয়োগ:* সহকারী প্রকৌশলী বা সমমানের পদে নিয়োগের জন্য ন্যূনতম বিএসসি ডিগ্রিধারী হতে হবে এবং সবাইকে নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। কোটার মাধ্যমে বা অন্য কোনো নামে সমমানের পদ তৈরি করে কোনো পদোন্নতি দেওয়া যাবে না।
২.*উপ-সহকারী প্রকৌশলী পদে নিয়োগ:* উপ-সহকারী প্রকৌশলী বা সমমানের পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে ডিপ্লোমা ও বিএসসি উভয় ডিগ্রিধারীর জন্যই পরীক্ষা উন্মুক্ত রাখতে হবে।
৩.*পদবি ও অ্যাক্রিডিটেশন:* বিএসসি ডিগ্রি ছাড়া যারা প্রকৌশলী পদবি ব্যবহার করেন, তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে। একই সাথে, যেসব বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্স এখনও আইইবি-বিএইটিই অ্যাক্রিডিটেশনের আওতায় আসেনি, সেগুলোকে দ্রুত যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।