শাওন বল, কালকিনি (মাদারীপুর) প্রতিনিধি:
মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দীর্ঘদিন ধরে সাপে কাটা ও জলাতঙ্ক প্রতিরোধী ভ্যাকসিনের (অ্যান্টিভেনম ও রযাবিস ভ্যাকসিন) ঘাটতি দেখা দিয়েছে। এ কারণে প্রতিদিনই নানা দুর্ঘটনায় আক্রান্ত রোগীরা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। চিকিৎসা নিতে গিয়ে রোগীদের ভোগান্তি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গ্রামাঞ্চলে এখনো সাপে কামড়ের ঘটনা ঘটছে। আবার হরহামেশাই কুকুর বা বিড়ালের কামড়ে শিশুসহ অনেকেই আহত হচ্ছেন। কিন্তু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভ্যাকসিনের মজুদ না থাকায় জরুরি মুহূর্তে রোগীরা প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পাচ্ছেন না। ফলে ভুক্তভোগীদের বাধ্য হয়ে মাদারীপুর সদর, বরিশাল কিংবা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছুটতে হচ্ছে। এতে একদিকে সময় নষ্ট হচ্ছে, অন্যদিকে বাড়ছে খরচ ও ঝুঁকি।
একজন ভুক্তভোগী অভিভাবক জানান, আমার ছেলেকে কুকুরে কামড় দিলে সঙ্গে সঙ্গে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাই। কিন্তু সেখানে ভ্যাকসিন না থাকায় আমাদের ৫০ কিলোমিটার দূরে যেতে হয়েছে। এতে শুধু খরচই বাড়েনি, সময় নষ্ট হওয়ার কারণে ছেলে ভীষণ আতঙ্কে ছিল।
চিকিৎসকদের মতে, সাপে কামড় বা জলাতঙ্কের টিকা সময়মতো না পেলে রোগীর জীবনহানির ঝুঁকি বহুগুণ বেড়ে যায়। বিশেষত গ্রামীণ অঞ্চলের সাধারণ মানুষ এমনিতেই সচেতনতার অভাবে দেরিতে চিকিৎসা নিতে আসেন। সেখানে আবার ভ্যাকসিন না থাকলে পরিস্থিতি মারাত্মক আকার ধারণ করে।
কালকিনি এলাকার সাধারণ মানষ অভিযোগ করে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এ সংকট চললেও কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। প্রতি বছরই বরাদ্দের ঘাটতি বা প্রশাসনিক জটিলতার কারণে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যথেষ্ট পরিমাণ ভ্যাকসিন সরবরাহ করা হয় না। ফলে সাধারণ মানুষ সরকারি চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হয়ে পড়ছেন।
এ অবস্থায় ভুক্তভোগী ও স্থানীয় বাসিন্দারা দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পর্যাপ্ত ভ্যাকসিন সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। তাদের দাবি, জরুরি চিকিৎসা পাওয়ার অধিকার জনগণের মৌলিক অধিকার, তাই এ ধরনের সংকট দ্রুত সমাধান না হলে ভবিষ্যতে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।