শনিবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৫, ০৪:১৮ অপরাহ্ন
সাকিব হোসেন, পটুয়াখালী প্রতিনিধিঃ
পটুয়াখালী-বাউফল-দশমিনা আঞ্চলিক মহাসড়কে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটিয়ে চলেছে চেয়ারম্যান পরিবহনের যাত্রীবাহী বাস। গত এক মাসেই অন্তত ১৫টি দুর্ঘটনার কারণ এই পরিবহনের বাস। এসব অভিযোগ তুলে পরিবহনটি বন্ধের দাবি জানিয়েছেন বাউফলের কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। তাদের সঙ্গে স্থানীয় জনসাধারণও যোগ দেন।
সোমবার সকাল ১০টার দিকে বগা এলাকার ডা. ইয়াকুব শরীফ ডিগ্রি কলেজের সামনে বিক্ষোভকারীরা ঘণ্টাখানেক বাউফল-বরিশাল মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন। কর্মসূচি শেষে শিক্ষার্থীরা দূরপাল্লার যাত্রীবাহী বাস, মিনিবাস ও ট্রাকচালকদের বৈধ লাইসেন্স পরীক্ষা করেন
মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে বাউফল সরকারি কলেজ, ডা. ইয়াকুব শরীফ ডিগ্রি কলেজ, বগা ইউনিয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও ছিলেন। পটুয়াখালী সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী কাওসার হোসেন সেখানে বলেন, এই রুটে চলাচলকারী চেয়ারম্যান পরিবহন জনসাধারণের কাছে আতঙ্কের নাম হয়ে উঠেছে। এক মাসে অন্তত ১৫ বার দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে তাদের বাস। এতে বহু হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু কার্যকর কোনো আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
অন্য বক্তারা অভিযোগ করেন, বাসমালিক সমিতি জনগণের নিরাপত্তার কথা না ভেবে শুধু টাকার আয়ের জন্য লক্করঝক্কর বাস দিয়ে চেয়ারম্যান পরিবহন চালু রেখেছেন। এই এলাকার মানুষকে এখন কর্মসংস্থানের জন্য নদীপথের পরিবর্তে সড়কপথে যোগাযোগ রক্ষা করছে। পদ্মাসেতু নির্মাণের পরে বেশিরভাগ মানুষই সড়কপথে যাতায়াত করেন।
স্থানীয় বাসিন্দা কাজী মো. ইলিয়াস হোসেনের ভাষ্য, ঢাকা-বাউফল রুটে চলাচলকারী চেয়ারম্যান পরিবহনসহ অনেক গাড়ির চালকেরই প্রশিক্ষণ নেই। যে কারণে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনায় মানুষ মারা যাচ্ছেন। কেউ চিরতরে পঙ্গুত্ব বরণ করছেন। এই পরিবহন তারা সড়কে দেখতে চান না।
আরও বক্তব্য দেন বাউফল সরকারি ডিগ্রি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ইয়াসিন আরাফাত জিসান, ডা. ইয়াকুব শরীফ ডিগ্রি কলেজের ডিগ্রি প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী সিথিলা আক্তার, কারিগরি শাখার শিক্ষার্থী মো. রাব্বি ও আবেদুল ইসলাম আবিদ প্রমুখ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চেয়ারম্যান পরিবহনের মালিক দশমিনা উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ইকবাল মাহমুদ লিটন। তাঁর এক কর্মী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘চেয়ারম্যান গাড়ি বেইচ্চা এখন নিরুদ্দেশ।’
বেপরোয়া বাস চালানোর অভিযোগ অস্বীকার করেন চেয়ারম্যান পরিবহনের সুপারভাইজার রাকিব হোসেন। আজ বিকেলে সমকালকে বলেন, ‘অ্যাকসিডেন্ট কি কেউ এমনি এমনি করে? এখন থেকে সতর্ক হয়ে চলব।’ মালিকপক্ষের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মালিক তো সাত-আটজন, কার নম্বর দেব বলেন? আর তাদের নম্বরে কল করেও পাবেন না।’
বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আখতারুজ্জামান সরকারের ভাষ্য, তিনি এই থানায় যোগ দেওয়ার পর থেকেই চেয়ারম্যান পরিবহনের দুর্ঘটনার বিষয়টি শুনে আসছেন। এসব তো পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের দেখার বিষয়।
2025 © জনপদ সংবাদ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
প্রয়োজনে যোগাযোগঃ ০১৭১২-০৬৮৯৫৩