আমির ফয়সাল, জাবি প্রতিনিধিঃ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে “Digging The Past” শিরোনামে এক ব্যতিক্রমধর্মী প্রত্নতত্ত্ব বিষয়ক দেয়ালিকা প্রদর্শনী শুরু হয়েছে।
সোমবার সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলা অনুষদ ভবনে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন হওয়া এ প্রদর্শনী দুই দিনব্যাপী চলবে।
ইতিহাস বিভাগের ৫৩তম আবর্তনের প্রথম পর্ব দ্বিতীয় সেমিস্টারের শিক্ষার্থীরা তাদের পাঠ্যক্রমের অন্তর্ভুক্ত ১০৯ নং কোর্স “প্রত্নতত্ত্ব পরিচিতি”-এর অংশ হিসেবে প্রদর্শনীটির আয়োজন করে। এতে তুলে ধরা হয়েছে—অতীত মানুষের নির্মিত প্রত্নবস্তু ও পরিবেশগত উপাত্তের (Ecofacts) মাধ্যমে কিভাবে অতীতের সংস্কৃতির বহুমাত্রিক দিক জানা সম্ভব।
প্রদর্শনীতে মোট ১০টি তথ্যসমৃদ্ধ ও নান্দনিক দেয়ালিকা স্থান পেয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো “প্রত্নতত্ত্ব ও ইতিহাসের আন্ত:সম্পর্ক”। এছাড়া প্রত্নবস্তু বিষয়ক চারটি, বাস্তুবস্তু বিষয়ক তিনটি এবং প্রত্নস্থান ও পরিপ্রেক্ষিতভিত্তিক দুটি দেয়ালিকা দর্শকদের জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। দর্শকদের বিশেষভাবে আকর্ষণ করেছে “প্রত্নমাটি ও মল জীবাশ্ম” শিরোনামের দেয়ালিকা, যেখানে শৈল্পিকভাবে তুলে ধরা হয়েছে প্রাচীন মানব ও প্রাণীর খাদ্যাভ্যাস, জীবনধারা ও সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্য অনুসন্ধানে এসব জীবাশ্মের গুরুত্ব।
দেয়ালিকা ছাড়াও শিক্ষার্থীরা একটি প্রত্নস্থানের খননকৃত অনুকৃতি তৈরি করেছে, যা প্রত্নতাত্ত্বিক কার্যপদ্ধতি সরাসরি অনুধাবনে একটি ভিন্নধর্মী প্রয়াস হিসেবে সবার দৃষ্টি কাড়ে। প্রদর্শনীতে ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী মো. সাদ্দাম হোসেনের বগুড়ার শেরপুর উপজেলার ধুনট মোড়ের বনাঞ্চলে পরিচালিত ভূপৃষ্ঠ জরিপ থেকে সংগৃহীত প্রত্নবস্তুও প্রদর্শিত হচ্ছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কলা ও মানবিক অনুষদের ডিন অধ্যাপক মোজাম্মেল হক, ইতিহাস বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক এমরান জাহানসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী। এছাড়াও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থীরাও এতে অংশগ্রহণ করেন।
এই প্রদর্শনীর সার্বিক তত্ত্বাবধান ও নির্দেশনা দেন কোর্স শিক্ষক এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সাবিকুন নাহার। শিক্ষার্থীরা জানান, তাঁর প্রেরণা ও সহযোগিতাতেই প্রদর্শনী সফলভাবে আয়োজন করা সম্ভব হয়েছে। তারা আশা প্রকাশ করেন, ইতিহাস ও প্রত্নতত্ত্বের সমন্বয়ের মাধ্যমে প্রাচীন বঙ্গভূমির মানব সংস্কৃতি ও তার পরিবর্তনকে আরও বস্তুনিষ্ঠভাবে অন্বেষণ করা সম্ভব হবে।