মঙ্গলবার, ০৫ অগাস্ট ২০২৫, ১১:০৫ অপরাহ্ন
মোঃ মাহিন খান, ঝালকাঠি প্রতিনিধি:
ঝালকাঠির রাজাপুরে গালুয়া এস.কে. বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (শারীরিক শিক্ষা) মো. নাসির উদ্দিনের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের সঙ্গে অশোভন আচরণের অভিযোগ উঠেছে। ছাত্রীদের কুপ্রস্তাব দেওয়া, কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করা এবং ক্লাসরুমে নিজের মোবাইল ফোন থেকে খারাপ ভিডিও দেখতে বাধ্য করার অভিযোগ এনে ভুক্তভোগী ছাত্রীদের পক্ষ থেকে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কাছে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষা শিক্ষক নাসির উদ্দিন দীর্ঘদিন ধরে ছাত্রীদের বিভিন্নভাবে বিরক্ত করে আসছিলেন। তাদের কুপ্রস্তাব দেওয়া, শরীরের বিভিন্ন স্থানে হাত দিয়ে শ্লীলতাহানি করা এবং অশালীন আচরণ করার অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, এক ছাত্রীকে দেখতে নাসির উদ্দিনের সাবেক প্রেমিকার মতো লাগে বলে মন্তব্য করে তাকে বাড়িতে নিয়ে আলাদা কক্ষে থাকার প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি।
এছাড়া, ছাত্রীদের গায়ে হাত দেওয়া, নূপুরের শব্দে তার শরীর শিহরিত হয়ে ওঠে বলে মন্তব্য করা, শরীরের বিভিন্ন আপত্তিকর স্থানে চিমটি কাটা, মোটরসাইকেলে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়াসহ নানা অনৈতিক প্রস্তাব দিতেন। বোরকা এলোমেলো থাকলে ছাত্রীদের ডেকে বলতেন— “তোমার সব কিন্তু দেখে ফেলেছি”। এমনকি স্ত্রী বাড়িতে না থাকলে ছাত্রীদের বাসায় নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাবও দিতেন।
লিখিত অভিযোগে ছাত্রীদের আরও বলা হয়, অনেক দিন ধরে তারা নিজেরা এ ধরনের পরিস্থিতি এড়িয়ে চলার চেষ্টা করেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত নিরুপায় হয়ে প্রধান শিক্ষকের শরণাপন্ন হয়। সোমবার (২৮ জুলাই) অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নাসির উদ্দিনকে সাময়িক বরখাস্ত করে।
অভিযুক্ত শিক্ষক নাসির উদ্দিনের বক্তব্য, “আমি শারীরিক শিক্ষার শিক্ষক। ক্লাসে বসে ছাত্রীদের সঙ্গে কখনও মজা করে কথা বলেছি, কখনও রসিকতা করেছি। পাঠদানের পাশাপাশি আন্তরিকতার সঙ্গে কথা বলেছি। আমার কথায় হয়তো ভুল হতে পারে, তবে অভিযোগের প্রমাণ থাকলে তা দেখানো হোক।”
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. জাহাঙ্গীর আকন বলেন, “ছাত্রীদের অভিযোগ পেয়ে এবং অভিযোগের সঙ্গে অভিযুক্ত শিক্ষকের বক্তব্যের কিছুটা মিল পাওয়ায় তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেলেই পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
রাজাপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এ.কে.এম. হারুন-অর-রশীদ বলেন, “আমি ওই বিদ্যালয়ে গিয়ে তদন্ত করে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।”
ঝালকাঠি জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ আব্দুল জব্বার বলেন, “এ বিষয়ে এখনও কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্তের মাধ্যমে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
2025 © জনপদ সংবাদ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
প্রয়োজনে যোগাযোগঃ ০১৭১২-০৬৮৯৫৩