রবিবার, ০৩ অগাস্ট ২০২৫, ০৬:১২ অপরাহ্ন
মাহমুদুন্নবী,পত্নীতলা ( নওগাঁ ) প্রতিনিধিঃ
দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে স্বৈরাচার আওয়ামী সরকারের আমলে সাবেক হুইপ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শহীদুজ্জামান সরকারের ছত্র ছায়ায় থেকে কোটি কোটি কালো টাকার মালিক বনে যাওয়া নওগাঁর পত্নীতলার ঘোষনগর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামিলীগ সভাপতি আবু বকর সিদ্দিক এখনো ধরা ছোয়ার বাহিরে রয়েছে। ফলে পত্নীতলা উপজেলার বিভিন্ন সংগঠনের রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে। সেই সাথে দ্রুত ইঁদুরের গর্ত থেকে খুঁজে বের করে আবু বকর সিদ্দিক কে গ্রেফতারের দাবি উঠেছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, পত্নীতলার ঘোষনগর ইউনিয়ন আওয়ামিলীগ সভাপতি ও ঘোষনগর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবু বকর সিদ্দিক পদে থাকা অবস্থায় গত ১৭ বছর ধামইরহাট- পত্নীতলার অঘোষিত রাজা হিসাবে পরিচিত ছিলেন। তার কথায় যেন শেষ কথা ছিলো পুরো এলাকায়।
তিনি ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় একাধিকবার তার অনিয়ম ও দূর্ণীতি নিয়ে একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল। শুধু তাই নয় তার বিরুদ্ধে দূর্ণীতি দমন কমিশন মহাপরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগও করা হয়েছিল। কিন্তু কোন এক অদৃশ্য শক্তির কারণে সেই লিখিত অভিযোগ ধামাচাপা দেওয়া হয়।
স্থানীয়সূত্রে জানা গেছে, আবু বকর সিদ্দিক ২০০৫ সালে জাতীয় পার্টি থেকে আওয়ামী লীগে যোগদান করেন এবং দের দশকের মধ্যেই দলের প্রভাবশালী নেতা বনে যান। স্থানীয় সংসদ সদস্য সংসদের সাবেক হুইপ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শহিদুজ্জামান সরকারের সাথে লিয়াজু মেন্টেন করে তিনি পুরো এলাকায় ভীতির রাজ্য কায়েম করেছিলেন। পুরো এলাকায় তার কথায় ছিলো আইন। প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ন প্রকল্প ২ এর ৩৩০ টি গৃহ নির্মাণে অনিয়ম, প্রতিটি ঘরের জন্য উপকারভোগীর থেকে ২০-৩০ হাজার টাকা করে আদায় করে আত্মসাৎ, বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদানের নামে প্রায় ৩ কোটি টাকা আদায়, ডিপ অপারেটর এসটিডল্লিউ অপারেটরদের থেকে প্রতি বছর ১০-২০ হাজার টাকা জোর পূর্বক আদায়, এছাড়াও নাম মাত্র কাজ করে এডিবির পুরো টাকা আত্মসাৎ, টিআর, কাবিটা, কাবিখা প্রকল্পের নাম মাত্র কাজ করে পুরো টাকা আত্মসাৎসহ বহু অভিযোগ রয়েছে। গগপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, সহকারী শিক্ষক শিক্ষক ও কর্মচারীসহ ৫ জন নিয়োগ, গগনপুর ওয়াজেদীয়া ফাজিল মাদ্রাসায় ৬-৭ শিক্ষক কর্মচারী নিয়োগ, ঘোষনগর উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষক কর্মচারী নিয়োগ, ঘোষনগর মাদ্রাসায় শিক্ষক কর্মচারী নিয়োগের মাধ্যমে প্রায় ১০ কোটি টাকা গ্রহণের অভিযোগ রয়েছে।
স্থানীয়সূত্রে জানা যায়, এক যুগ আগেও সম্পদ বলতে তার বাবার ১.৫ একর জমি ছাড়া আর কিছুই ছিল না। বর্তমানে এই নেতা সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। তিনি ব্যবহার করে ব্রান্ডের গাড়ি। কৃষি জমি প্রায় ১০ একর, নওগাঁ শহরে ৩ কোটি টাকার জমি, ৫ একর জমির উপর রয়েছে ইট ভাটা, রয়েছে একাধিক ভবন ও মার্কেট, নিজে চলতেন একাধিক বর্ডিগার্ড নিয়ে। ঢাকাতেও একাধিক ফ্লাট আছে বলে জানা যায় বিশ্বস্ত সূত্রে।
সর্বশেষ ৫ জানুয়ারী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে তাকে জেতাতে সাবেক এমপি ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রীর নির্দেশে একাধিক ভোট কেন্দ্র থেকে ব্যালট পেপার উঠিয়ে নিয়ে আসার সময় পরিকল্পিত ভাবে তাদের লোকজন দিয়ে দাঙ্গা লাগিয়ে ১১৩ জনের নাম উল্লেখ্য করে আড়াই হাজার নিরীহ অসহায় মানুষের উপর মামলা করে পুরুষ শূন্য করেছিল পুরো ইউনিয়ন।
সম্প্রতি ঘোষনগর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি কে ঢাকার মিরপুর ও মোহাম্মদপুর এলাকায় দেখা গেছে বলে বিশ্বস্তসূত্রে জানা যায়।
2025 © জনপদ সংবাদ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
প্রয়োজনে যোগাযোগঃ ০১৭১২-০৬৮৯৫৩