মোঃ নাসরুল্লাহ সাকিব, ঢাকা প্রতিনিধিঃ
দেশজুড়ে ফের বাড়ছে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ, তবে এবার পরিস্থিতি অনেকটাই ভিন্ন। আগের মতো জ্বর, কাশি বা ক্লাসিক উপসর্গ নয়—বর্তমানের করোনা ভ্যারিয়েন্ট JN.1 অধিক ‘নীরব’ এবং দ্রুতগতিতে ছড়ায়। আক্রান্ত অনেকেই বুঝতে পারছেন না তাদের শরীরে ভাইরাসের উপস্থিতি, আর সেখানেই মূল ভয়।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধরনটি সাধারণ টেস্টে ধরা পড়ে না বললেই চলে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নাক বা গলায় সময় না কাটিয়ে এটি সরাসরি ফুসফুসে চলে যাচ্ছে, ফলে উপসর্গ দেখা দিলেও পরীক্ষার ফলাফল আসছে নেগেটিভ। এতে করে অনেকেই মনে করছেন তারা সুস্থ, কিন্তু ততক্ষণে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ছে চারপাশে।
স্বাস্থ্য ব্যবস্থার দুর্বলতাও বাড়াচ্ছে ঝুঁকি। দেশে এখনও পর্যাপ্ত কিট নেই এই বিশেষ ধরনটি নির্ধারণের জন্য। বেশিরভাগ জায়গায় সাধারণ করোনা পরীক্ষা চললেও, তা এই নতুন ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত করতে অক্ষম। ফলে ভাইরাস কতটা ছড়িয়েছে বা কে কে সংক্রমিত—তা জানার উপায়ও সীমিত।
সরকারি হাসপাতাল থেকে শুরু করে স্থানীয় চিকিৎসাকেন্দ্র—বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই ভ্যারিয়েন্ট মোকাবেলায় প্রস্তুত নয়। অক্সিজেন সাপোর্ট, আইসোলেশন ইউনিট কিংবা দ্রুত সাড়ার মতো চিকিৎসা ব্যবস্থা অনেক হাসপাতালেই এখনো অনুপস্থিত।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ইতিমধ্যেই এই ভ্যারিয়েন্টকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে শনাক্ত করেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যতই স্বাভাবিক ভাবা হোক না কেন, এই ভাইরাসের প্রতিটি রূপই ভয়ানক হতে পারে। বিশেষ করে বয়স্ক এবং রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কম এমন ব্যক্তিদের জন্য এটি প্রাণঘাতী হয়ে উঠতে পারে।
জনগণকে বলা হচ্ছে, আবারো ফিরতে হবে সেই পুরনো অভ্যাসে—মাস্ক পরা, হাত ধোয়া, স্যানিটাইজার ব্যবহার, এবং জনসমাগম এড়িয়ে চলা। এখনই সচেতন না হলে আবারও দেখা দিতে পারে ভয়াবহ পরিস্থিতি।