আব্দুল্লাহ আল রোমান, সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধিঃ
চট্টগ্রাম মহানগরের প্রবেশপথ মাদামবিবিরহাট এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে শাহী পরিবহনের একটি বেপরোয়া বাসের ধাক্কায় এক পথচারী ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারিয়েছেন। ভয়াবহ এই দুর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তির মাথা শরীর থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে, যা উপস্থিত জনতাকে স্তব্ধ করে দেয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রোববার দুপুর আনুমানিক ১ টার দিকে ঢাকামুখী শাহী পরিবহনের একটি দ্রুতগতির বাস মাদামবিবিরহাট মোড়ে সড়ক পার হতে থাকা এক পথচারীকে সামনে থেকে ধাক্কা দেয়। আঘাত এতটাই শক্তিশালী ছিল যে, ঘটনাস্থলেই ওই ব্যক্তির মৃত্যু ঘটে এবং তার দেহ ভয়াবহভাবে ক্ষতবিক্ষত হয়।
নিহতের নাম-পরিচয় এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। স্থানীয়রা ধারণা করছেন, তিনি আশপাশের কোনো এলাকার বাসিন্দা হতে পারেন।
দুর্ঘটনার পর মুহূর্তেই স্থানীয় জনগণ বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। তারা দ্রুত ঘটনাস্থলে জড়ো হয়ে শাহী পরিবহনের দুর্ঘটনাকবলিত বাসটিকে আটকে দেয় এবং পরে আশপাশের ভাটিয়ারী ও মাদামবিবিরহাট এলাকা থেকে আরও তিনটি শাহী বাস থামিয়ে রাখে। এ সময় জনতা স্লোগান দিতে থাকে, ‘শাহী বাস চলবে না, খুনিদের বিচার চাই’।
বিক্ষোভকারীরা অভিযোগ করেন, শাহী পরিবহনের চালকেরা নিয়মিতভাবেই অতিরিক্ত গতি ও বেপরোয়া চালনার মাধ্যমে সাধারণ মানুষের জীবন হুমকির মুখে ফেলছে। অথচ কর্তৃপক্ষ এই পরিবহনের বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
দীর্ঘক্ষণ চলা বিক্ষোভের ফলে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের উভয়পাশে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে হাইওয়ে পুলিশ, ভাটিয়ারী ফাঁড়ি পুলিশ এবং সীতাকুণ্ড থানা পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। প্রায় দেড় ঘণ্টার চেষ্টায় তারা জনতাকে বুঝিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে।
পুলিশ জানিয়েছে, আটককৃত বাসগুলো থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে এবং চালকদের পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা চলছে। নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সুশীল সমাজের নেতারা এই ঘটনাকে অত্যন্ত দুঃখজনক ও উদ্বেগজনক হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। তাদের মতে, সড়কে বেপরোয়া চালনা ও শিথিল নজরদারির কারণে এমন ঘটনা বারবার ঘটছে। তারা দ্রুত সময়ের মধ্যে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং সড়ক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের আহ্বান জানিয়েছেন।