বুধবার, ০৭ মে ২০২৫, ০৫:৪৩ পূর্বাহ্ন
চৌদ্দগ্রাম প্রতিনিধি:
বিয়ের পর ঠাঁই হয়নি স্বামীর বাড়িতে। সন্তান নিয়ে বাবার বাড়িতে ১৪ হাত জায়গায় বসত খোদেজার। সেই জায়গাও ছাড়তে হয়েছে ৫ বোনের একমাত্র ভাইয়ের চক্রান্তে। বিয়ের উপযুক্ত মেয়েকে নিয়ে খোদেজা এখন থাকেন অন্যের বাড়িতে।
বাড়ি বাড়ি ঝি’এর কাজ করে চলে সংসার। ঘরের জন্য হচ্ছেনা মেয়ের বিয়ে। ছোট ভাই ইসমাইল হোসেন পরামর্শে নতুন ঘর দিতে ভাঙ্গেন মাথা গোঁজার পুরাতন ঘরটি।পাড়া-প্রতিবেশীর সহযোগীতায় কিনেন ইট বালু সিমেন্ট। কিন্তু বেঁকে বসেন ভাই, নির্মাণ করতে দিবেনা পাকা ঘর। নিরুপায় খোদেজা শরণাপন্ন হন সমাজপতিদের, দফায় দফায় বসে সালিশ বৈঠক।
বিচারকরা রায় দেন পৈত্রিক সম্পত্তিতে খোদেজা ও তার অপর বোনের অংশে ঘর নির্মাণের। দুই বোনের অংশ মিলিয়ে হয় ১৪ হাত। যেখানে গত ২৫ বছর ছিল খোদেজার বসতঘর। বর্তমানে বিচারকদের রায়ের বিপরীতে ইসমাইল বলছে দুই বোনের অংশে নয়, সে ঘর নির্মাণ করতে দিবে শুধুমাত্র খোদেজার অংশে অর্থাৎ ৭ হাত জায়গায়।
সরেজমিন মঙ্গলবার (৬এপ্রিল) কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলা চিওড়া ইউনিয়ন ঘোষতল গ্রামে সাংবাদিকদের সামনে মৃত আব্দুল মালেকের পাঁচ বোনের এক ভাই ইসমাইল হোসেন বলছেন উল্টাপাল্টা কথা। একবার বলছেন মা বাবা বাড়ির জায়গা তার নামে লিখে দিয়ে গেছেন। আবার বলছেন তিন বোনের কাছ থেকে তাদের অংশ কিনে নিয়েছেন। আবার বলছেন খোদেজা ৭ হাত জায়গায় ঘর দিক। বাকি অংশে আমি রান্নাঘর দিব। তারপর বলছেন আমার দুই ছেলে বড় হচ্ছে, আমি বাড়ির জায়গা বোনদের দিলে সন্তানদের ভবিষ্যৎ কি হবে। আমি তাকে জায়গা দিব না, সে কোর্টে যাক।
অসহায় খোদেজা এখন সহায়তা চান প্রশাসনের। আর ওই গ্রামের মানুষের একটাই জিজ্ঞাসা ৭ হাত জায়গায় কী ঘর হয়?
ওই গ্রামের সত্তোরোর্ধ নজির আহমেদ বলেন, খোদেজা তার প্রাপ্য পৈত্রিক হক এর সম্পত্তিতে ঘর নির্মাণ করবে, তাই সমাজের সবাই সাহায্য সহযোগীতা করেছে। এখন তার ভাই বাঁধা দিচ্ছে। সালিশি সিদ্ধান্তও মানছেনা সে। উল্টো বিচারকদের বিভিন্ন হুমকি-ধামকি দিচ্ছে।
আবদুল মালেক নামের গ্রামের আরেকজন বলেন, এই অসহায় খোদেজার উপর জুলুম করা হচ্ছে। তার বিয়ের উপযুক্ত মেয়েকে বিয়ে দিতে হবে, তাই ঘর করা জরুরী। কিন্তু ইসমাইল তার সাঙ্গপাঙ্গদের সহযোগীতায় বোনকে ঘর করতে দিচ্ছেনা এবং বিচারকদের গালমন্দ করে।
এ বিষয়ে ভাই ইসমাইল হোসেন বলেন বাড়িতে মোট সম্পত্তি তিন শতক। আমার দুই ছেলে বড় হয়েছে বোনদেরকে বাড়িতে জায়গায় দিলে আমার ঘর করার জায়গা থাকবে না। আমি বাড়িতে জায়গা দিব না তারা কোর্টে যাক।
এ বিষয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি জাকিয়া সারোয়ার লিমা বলেন বোনদের সম্পত্তি ভাই দিতে বাধা হয়ে দাঁড়ালে সরকার বন্টক মামলায় এখন অনেক সহজ করে দিয়েছেন। বোনরা যদি বন্টকের মামলা দায়ের করে তাহলে ছয় মাস থেকে দুই বছরের মাথায় মামলা নিষ্পত্তি হয়ে যাবে। কোট তখন অংশ হিসেবে বোনদেরও মালিকানা ঘোষণা করবে।
2025 © জনপদ সংবাদ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
প্রয়োজনে যোগাযোগঃ ০১৭১৫-১২৫২৪৩