রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ০২:৫৫ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনামঃ
চৌদ্দগ্রামে তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী ও স্বজনদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হোটেল ব্যবসায়ী সংস্কার ও গণহত্যার বিচার ছাড়া নির্বাচন নিরপেক্ষ হতে পারে না; জামায়াতের সেক্রেটারি দাবি আদায়ে কাফনের কাপড় পরে কারিগরি শিক্ষার্থীদের গণমিছিল একাত্তরের ঘটনায় পাকিস্তানকে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান বাংলাদেশের চৌদ্দগ্রামে জামায়াতের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারীর আগমনে স্বাগত মিছিল চৌদ্দগ্রামে টাকা আত্মসাত ঘটনায় প্রবাসীর বীরমুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে হয়রানির অভিযোগ চৌদ্দগ্রামে বিএনপির প্রীতি ফুটবল ম্যাচে দর্শকের ভীড় চৌদ্দগ্রামে বিএনপির বৈশাখী আনন্দ শোভাযাত্রা চৌদ্দগ্রামে বিভিন্ন কর্মসূচিতে নববর্ষ উদযাপন ফিলিস্তিনে বর্বর হামলার প্রতিবাদে এনায়েতপুরে খেলাফত মজলিসের বিক্ষোভ মিছিল দুই শিশুকে যৌন নিপীড়ন, বৃদ্ধ গ্রেফতার এনায়েতপুরে ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন চৌদ্দগ্রামে ঘুমের ঘরে ড্রাইভার মিলন নিহত বাংলাদেশকে বিনিয়োগের স্বর্গরাজ্য বানাতে চায় এনসিপি মুজিববর্ষে ৪ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ের অভিযোগ হাসিনা-রেহানার বিরুদ্ধে

সাব-রেজিস্ট্রার, দলিল লেখক দ্বন্ধে রেজিস্ট্রি কার্যক্রম বন্ধ, ভোগান্তিতে দাতা গ্রহিতা

আবু বকর সুজন,চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধি :

টানা ৪ কর্মদিবস পেড়িয়ে গেলেও এখনো কাজে ফেরেনি চৌদ্দগ্রাম সাব রেজিস্ট্রার মেহেদী হাসান (অতিরিক্ত দায়িত্ব)। কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে সাব রেজিস্ট্রার, দলিল লেখক দ্বন্ধে বন্ধ রয়েছে দলিল রেজিস্ট্রি কার্যক্রম। কোটি টাকা রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা দলিল দাতা, গ্রহীতা ও নকল দলিল উত্তোলনকারীরাসহ বিভিন্ন সেবা গ্রহীতারা। সাব রেজিস্ট্রারের অনুপস্থিতি তথ্য না জানায় ঢাকা-চট্রগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সেবা গ্রহীতারা এসে নানান মন্তব্য করে ফিরে যান।

সোমবার (১০ই ফেব্রুয়ারি) সাব-রেজিস্টার অফিস সূত্রে ও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলিল লেখক জানান , গুনবতী সাব-রেজিস্টার অফিস দলিল লেখক সমিতির অন্তর্ভুক্ত দলিল লেখক মোহাম্মদ হানিফ গত মঙ্গলবার (৪ ফেব্রæয়ারী) বিকেলে পৌরসভার ২২ শতক জায়গার দলিল সম্পাদনের জন্য সাব রেজিস্টারের খাস কামরায় প্রবেশ করেন। এসময় অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা সাব-রেজিস্টার মেহেদী হাসান ত্রুটিপূর্ণ কাগজ দেখে ভেন্ডার হানিফকে শতভাগ নির্ভুল দলিল নিয়ে আসতে বলেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ভেন্ডার সহ দলিল গ্রহীতা সাব-রেজিস্টারকে লাঞ্চিত করেন। এ ঘটনার জেরে ১০ই ফেব্রæয়ারী (সোমবার) পর্যন্ত সাব-রেজিস্টার কর্মস্থলে আসেননি। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন দলিল দাতা ও গ্রহীতারা।
গত বুধবার, বৃহস্পতিবার, রবিবার, সোমবার চার কর্ম দিবসে দেখা যায় সাব-রেজিস্টার অফিসে এসে দেখা যায় ২২ শতক জায়গার কবলা দিতে আসা বুদ্দিন গ্রামের রফিকুল ইসলাম, শফিকুল ইসলাম, ফরিদা বেগম গং জানান, ‘আমরা পূর্বনির্ধারিত বুধবার (৫ই ফেব্রæয়ারী) একটি দলিল সম্পাদনের জন্য এসেছিলাম ঢাকা থেকে। কিন্তু এখানে জানলাম অভ্যন্তরীণ ঝামেলায় সাব-রেজিস্টার অনুপস্থিত। কর্মসূত্রে আমরা সবাই ঢাকা থাকি, মাইক্রোবাস ভাড়া করে ঢাকা থেকে এসেছি, এখন দলিল সম্পাদন না করেই ফিরে যেতে হবে।’
উপজেলার আলকরা ইউনিয়নের আলকরা গ্রাম থেকে আসা আবদুল মমিন বলেন, ‘টাকার জন্য জমি বিক্রি করেছি, কিন্তু আজকে সাব-রেজিস্টার না থাকায় ফিরে যেতে হচ্ছে। জমি রেজিস্টি ছাড়া ক্রেতা টাকা দিচ্ছেনা। বিপদের সময় টাকা-ই যদি না পাই তাহলে জমি বিক্রি করে কী লাভ হলো!
ঘোলপাশা ইউনিয়নের কোমাল্লা গ্রাম থেকে নতুন বাড়ি নির্মাণের জন্য ক্রয়কৃত জমির দলিল সম্পাদন করতে আসা ইদ্রিস মিয়া বলেন, ‘চাকরিসূত্রে এলাকার বাইরে থাকি। ছেলেমেয়ে বড় হয়েছে। সন্তানদের তাগাদায় একটি নতুন বাড়ি করার উদ্দেশ্যে দলিল সম্পাদন করতে এসে ফিরে যাচ্ছি।’
দলিল লেখক মমিনুল ইসলাম জানান, আমার দুইটি দলিল রেজিস্ট্রি হওয়ার কথা ছিল। যার একটি বন্টননামা। বন্টননামার একজন অংশীদার আগামীকাল দেশের বাইরে চলে যাবে। কয়েকজন আসছেন শহর থেকে। এমন পরিস্থিতিতে সকলেই ক্ষতিগ্রস্থ।
আরেক দলিল লেখক মোহাম্মদ রায়হান জানান, সাব রেজিস্ট্রারে সাথে দুর্ব্যবহারের কারণে তিনি অফিসে আসছেন না বলে জেনেছি।
তবে সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, চৌদ্দগ্রাম সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের দলিল লেখক সমিতির নেতৃবৃন্দ সবসময় ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেন। সাব-রেজিস্ট্রার মেহেদী(অতিরিক্ত দায়ীত্ব) চৌদ্দগ্রাম অফিসে যোগ দেয়ার কয়েক দিনের মাথায় সমিতির নেতৃবৃন্দের দ্বারা হেনস্থার শিকার হন। ঘটনার সত্যতা জানতে গিয়ে জানা যায়, ভুল দলিল সংশোধন ব্যতিরেকে সম্পাদন না করায় ক্ষিপ্ত হয়ে সমিতির অন্তত দুই নেতা সাব-রেজিস্ট্রারের সাথে বাজে আচরণ করেন।
দলিল লেখক সমিতির নেতারা নিজেদের সুবিধামত ইচ্ছানুযায়ী কার্য সম্পাদন না হলে তারা রামকেও রাবণ বানিয়ে ছাড়েন।

দলিল লেখক মোহাম্মদ হানিফ বলেন, দলিল গ্রহীতাগণের সাথে রেজিস্ট্রারের ঝামেলা হয়েছে। ঐদিন ঘটনার সময়ে সমিতির সভাপতি শাহনেওয়াজ শাহিন ও দলিল লেখক মমিনুল ইসলাম ঘটনাস্থলে ছিলেন। আমাদের সাথে কোন ঝামেলা হয়নি। সম্ভবত ব্যক্তিগত কারণে তিনি (সাব রেজিস্ট্রার) আসছেন না।
চৌদ্দগ্রাম দলিল লেখক সমিতির সভাপতি শাহনেওয়াজ শাহিন জানান, সন্ধার পরে হওয়ায় ঐদিন (৪ই ফেব্রæয়ারী) আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম না। পরে জেনেছি। তবে ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে সাব রেজিস্ট্রার অফিসে আসছেন না বলে জেনেছি।
চৌদ্দগ্রাম সাব রেজিস্ট্রার মেহেদী হাসান (অতি: দায়িত্ব) জানান, এখানে কাজ করার বিষয়ে মনমানসিকতা নাই। আমি ইতোমধ্যেই বিষয়টি জেলা রেজিস্ট্রার মহোদয়কে জানিয়েছি। আমি এখন থেকে নিয়মিত গুনবতী সাব রেজিস্ট্রি অফিসে দায়িত্ব পালন করবো।
জেলা রেজিস্ট্রার মনিরুল হাসান বলেন, মেহেদী হাসান অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে চৌদ্দগ্রাম সাব রেজিস্ট্রি অফিসে দায়িত্ব পালন করছে। গত ৪ই ফেব্রæয়ারী মঙ্গলবার জনৈক দলিল লিখক ও তার দলিলের গ্রহীতা কর্তৃক মেহেদী হাসানকে লাঞ্চিত করা হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে চৌদ্দগ্রাম সাব রেজিস্ট্রি অফিসে অনেকেই (সাব রেজিস্ট্রার) আসতে রাজি হচ্ছেন না। আশা করছি দ্রæতই সমস্যার সমাধান হবে।

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন

2025 © জনপদ সংবাদ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

প্রয়োজনে যোগাযোগঃ ০১৭১৫-১২৫২৪৩