যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে সোমবার শপথ নিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। পরের দিনই সদ্য বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের মধ্যপ্রাচ্য নীতি এবং গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তি সম্পন্ন করার অক্ষমতাকে কটাক্ষ করেন তিনি।
গাজা যুদ্ধবিরতি কার্যকর প্রসঙ্গে ট্রাম্প বলেন, ‘বাইডেন এটি করতে পারেননি। আর আমি যদি কোনো সময়সীমা আরোপ না করতাম, এটি কখনোই সম্ভব হতো না’।
মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘বন্দিরা (ইসরাইলি বন্দি) একে একে ফিরতে শুরু করেছে। আমি যদি এখানে (হোয়াইট হাউসে) না ফিরতাম, তারা আর কখনোই ফিরে আসত না... তারা সবাই মারা যেত’।
ট্রাম্প ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরাইলে হামাসের হামলার জন্য বাইডেন প্রশাসনের ‘দুর্বলতাকে’ই দায়ী করেন। তিনি বলেন, ‘৭ অক্টোবরের ঘটনা কখনোই ঘটতে দেওয়া উচিত ছিল না। কেউ মারা যেত না। কিন্তু তাদের (বাইডেন প্রশাসন) দুর্বলতার কারণেই এটি ঘটেছে এবং এটি একটি বিপর্যয়..., ছয় মাস আগে আরও ১১ জন জীবিত বন্দি থাকত’।
এ সময় মধ্যপ্রাচ্য পরিদর্শনের পরিকল্পনা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা মধ্যপ্রাচ্যে যাওয়ার কথা ভাবছি। তবে সেটা এখনই নয়’।
এদিকে গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রথম ছয় সপ্তাহের প্রথম ধাপটি গত ১৯ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হয়েছে। যা ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরাইলি আগ্রাসন বন্ধ করেছে।
তিন ধাপের এই চুক্তিতে বন্দি বিনিময় এবং স্থায়ী শান্তি নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে গাজা থেকে ইসরাইলি বাহিনীর পুরোপুরি প্রত্যাহার অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
ইসরাইল ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের আক্রমণের পর থেকে গাজায় অব্যাহত আগ্রাসন চালিয়ে ৪৭,০০০ এরও বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে। অন্যদিকে হামাসের ওই হামলায় ইসরাইলে প্রায় ১,২০০ জন নিহত হয়েছিল বলে দাবি করে ইসরাইলি সরকার।
জবাবে ১৫ মাস ধরে চালানো অব্যাহত ইসরাইলি আক্রমণে পুরো গাজা উপত্যকা রীতিমত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। উপকূলীয় এই অঞ্চলের অর্ধেকের বেশি বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে এবং প্রায় ২০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। খাবার এবং বিশুদ্ধ পানির চরম অভাবে তারা চরম মানবিক সংকটে ভুগছে।
ট্রাম্প এ সময় বোল্টন ও সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট ডিক চেনির বিরুদ্ধে সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশকে ইরাক আক্রমণের জন্য প্ররোচিত করার অভিযোগ তোলেন।
ট্রাম্প বলেন, ‘বোল্টন এবং চেনির মতো কয়েকজন বুশকে বোঝানোর মাধ্যমে আমাদের মধ্যপ্রাচ্য ধ্বংস করে দিয়েছিল’। এ সময় তিনি বোল্টনকে ‘বোকা লোক’ এবং ‘যুদ্ধপ্রিয় ব্যক্তি’ বলে অভিহিত করেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘সেই সময় আমরা মধ্যপ্রাচ্য ধ্বংস করলাম এবং চলে এলাম। এর থেকে আমরা কিছুই পাইনি। শুধু অনেক মৃত্যুর ঘটনা ছাড়া’। সূত্র: আনাদোলু