শনিবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১:৪৭ অপরাহ্ন
মোঃ শরিফুল ইসলাম, নাটোর সদর প্রতিনিধিঃ
নাটোর জেলার দিঘাপতিয়া অবস্থিত ঐতিহাসিক উত্তরা গণভবন আজ শুধু একটি সরকারি স্থাপনা নয়, বরং ইতিহাস, ঐতিহ্য ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক অনন্য নিদর্শন। প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত অসংখ্য পর্যটকের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠছে এই দর্শনীয় স্থানটি।
ঐতিহাসিকভাবে উত্তরা গণভবনের সূচনা হয় ব্রিটিশ শাসনামলে। ১৮৩১ সালে নাটোরের তৎকালীন রাজা দিঘাপতিয়া রাজবংশের শাসকরা এটি নির্মাণ করেন। পরবর্তীতে পাকিস্তান আমলে এটি গভর্নরের বাসভবন হিসেবে ব্যবহৃত হয়। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে এই স্থাপনাটিকে রাষ্ট্রপতির সরকারি বাসভবন (উত্তরা গণভবন) হিসেবে ঘোষণা করেন। সেই থেকে এটি রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক স্থাপনা হিসেবে পরিচিত।
প্রায় ৪৩ একর জায়গাজুড়ে বিস্তৃত উত্তরা গণভবনের স্থাপত্যশৈলী ও প্রাকৃতিক পরিবেশ দর্শনার্থীদের মুগ্ধ করে। বিশাল সবুজ লন, সারিবদ্ধ প্রাচীন গাছ, মনোরম ফুলের বাগান এবং নান্দনিক ভবন দর্শনার্থীদের কাছে মনে গেথে যাওয়ার মত পরিবেশের সৃষ্টি করেছে। মূল ভবনের পাশাপাশি রয়েছে দৃষ্টিনন্দন ফোয়ারা, পুকুর, খোলা প্রান্তর ও প্রশস্ত পথঘাট।
শীতকাল ও সরকারি ছুটির দিনে এখানে পর্যটকের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যায়। পরিবার-পরিজন নিয়ে ভ্রমণপিপাসু মানুষ, শিক্ষার্থী, গবেষক এবং ইতিহাসপ্রেমীরা এখানে এসে ইতিহাসের ছোঁয়া অনুভব করেন। অনেকেই ছবি তোলা ও প্রাকৃতিক পরিবেশ উপভোগে ব্যস্ত সময় কাটান।
পর্যটকরা জানান, উত্তরা গণভবনের শান্ত পরিবেশ ও সৌন্দর্য মানসিক প্রশান্তি এনে দেয়। বিশেষ করে গ্রামবাংলার সবুজের মাঝে এমন একটি ঐতিহাসিক স্থাপনা নতুন প্রজন্মের কাছে দেশের ইতিহাস জানার এক উন্মুক্ত পাঠশালা হিসেবে কাজ করছে।
স্থানীয় প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে নিরাপত্তা ও পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখার পাশাপাশি পর্যটন সুবিধা বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, পরিকল্পিত ব্যবস্থাপনা ও পর্যটনবান্ধব উন্নয়ন হলে উত্তরা গণভবন জাতীয় পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে আরও বেশি পরিচিতি লাভ করবে।
ইতিহাস, ঐতিহ্য আর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপূর্ব সমন্বয়ে নাটোরের উত্তরা গণভবন আজ দেশের অন্যতম আকর্ষণীয় দর্শনীয় স্থান হিসেবে পর্যটকদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।
2025 © জনপদ সংবাদ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
প্রয়োজনে যোগাযোগঃ ০১৭১২-০৬৮৯৫৩