দোয়ারাবাজার (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি:
সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার পান্ডার গাঁও ইউনিয়নের চেঙ্গাইয়া গ্রামের দুর্বৃত্তদের অগ্নিসংযোগে একের পর এক কৃষকের খড়ের গাদা (ক্ষেরের পাড়া) সম্পূর্ণ পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এ ঘটনায় পার্শ্ববর্তী একটি গোয়ালঘরে আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত আগুনে পুড়ে তিনটি গরু জীবন্ত দগ্ধ হয়ে মারা যায়। আর তিন টি গরু অর্ধেক অংশ পুড়ে যায় প্রায় এক লাখ ৪০ হাজার টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
ঘটনার পর থেকে এলাকায় ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। খড়ের বাজার মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় পরিকল্পিতভাবে খড়ের গাদায় একের পর এক অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটছে বলে আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। ফলে রাতে নির্ঘুম সময় কাটাচ্ছেন অনেক কৃষক। পরিস্থিতি মোকাবেলায় এলাকায় রাতের পুলিশ টহল জোরদারের দাবি জানিয়েছেন তারা।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ও গ্রামবাসীরা জানান, শীতের রাতে গ্রামের মানুষ সাধারণত আগেভাগেই ঘুমিয়ে পড়েন এবং ফজরের আজানের পরপরই কাজে নেমে পড়েন। এই সুযোগ কাজে লাগিয়েই দুর্বৃত্তরা খড়ের গাদায় আগুন দিচ্ছে বলে তাদের ধারণা।
ভুক্তভোগী কৃষক চেঙ্গাইয়া গ্রামের আবিদ আলীর ছেলে ছমির উদ্দিনের বাড়িতে,২৬ ডিসেম্বর রাতে অনুমান ১ ঘটিকার সময় এ ঘটনা ঘটে । একই গ্রামের আব্দুল ছমাদের পুত্র মোঃ আব্দুল ছত্তার জানান, তার প্রায় ৪ কেদার জমির খড়ের গাদা ছিল, যা আগুনে পুড়ে যায়। এতে তার আনুমানিক ৪০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত আনুমানিক ১টা ৩০ মিনিটের দিকে ছমির উদ্দিন ও তার পরিবারের সদস্যরা রাতের খাবার শেষে ঘুমিয়ে ছিলেন। এ সময় তার স্ত্রী ও চাচি আমেনা খাতুন চিৎকার করে জানালে দেখা যায়, বাড়ির পূর্ব পাশে অবস্থিত খড়ের গাদায় আগুন জ্বলছে।
পরিবারের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে তিনজন লোককে দৌড়ে পালিয়ে যেতে দেখলেও অন্ধকারের কারণে তাকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। একজন কে চিনতে পেরেছেন পরে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় আগুন নেভানোর চেষ্টা করা হয়। এতে গোয়ালঘরের আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা গেলেও খড়ের গাদা সম্পূর্ণ পুড়ে যায়।
একই গ্রামের মৃত নুর রহমানের ছেলে নবী হোসেনের ২০ ডিসেম্বর গোয়াল ঘরের তালা ভেঙে ২ টি ষাঁড় গরু চুরি হয়েছে , এ ঘটনায় ভুক্তভোগী মোঃ ছমির উদ্দিন ও নবী হোসেন দোয়ারাবাজার থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন এবং দোষীদের শনাক্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে দোয়ারাবাজার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তরিকুল ইসলাম তালুকদার জানান, অভিযোগ গ্রহণ করা হয়েছে এবং ঘটনার তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।