রবিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৪:০০ অপরাহ্ন
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলায় আড়াই মাস আগে নিখোঁজ হওয়া কিশোর মারজান মিয়া (১৫) হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটন করেছে পুলিশ। এই চাঞ্চল্যকর ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে শাকিল (১৫) নামে এক কিশোরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও থানা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানা পুলিশ। ঘটনার সূত্রপাত গত ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখ সন্ধ্যায়। সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার বাসিন্দা মারজান মিয়া সেদিন বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফেরেনি। অনেক খোঁজাখুঁজির পর সন্ধান না পেয়ে ১ অক্টোবর সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন তার বাবা।
নিখোঁজের দীর্ঘ সময় পর গত ১৪ নভেম্বর দুপুরে সদর থানাধীন সুরমা ইউনিয়নের রাউটিয়া বিল এলাকায় জনৈক আব্দুল মালেকের ধানক্ষেতে শ্রমিকরা ধান কাটার সময় একটি মানুষের কঙ্কাল দেখতে পান। খবর পেয়ে সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ রতন শেখের নেতৃত্বে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে কঙ্কালটি উদ্ধার করে। সে সময় লাশের পাশে পড়ে থাকা জলপাই রঙের গেঞ্জি ও নীল রঙের জার্সি প্যান্ট দেখে পরিবার নিশ্চিত করে এটি নিখোঁজ মারজানের কঙ্কাল।
ঘটনাস্থল তল্লাশিকালে পুলিশ একটি রক্তমাখা ভাঙা কাঁচির অংশ বিশেষ উদ্ধার করে, যা তদন্তে গুরুত্বপূর্ণ মোড় ঘুরিয়ে দেয়। এরপরই শুরু হয় পুলিশের বিশেষ অভিযান। সুনামগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার এ বি এম জাকির হোসেন, পিপিএম-এর দিকনির্দেশনায় ওসি মোঃ রতন শেখের নেতৃত্বে একটি চৌকস তদন্ত টিম মাঠে নামে।পারিপার্শ্বিক তথ্য এবং আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে পুলিশ নিশ্চিত হয় যে, এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে কিশোর শাকিল জড়িত।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে শুক্রবার নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে শাকিল হত্যাকাণ্ডে নিজের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছে। পরবর্তীতে সে আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।
এ বিষয়ে সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ রতন শেখ, পিপিএম বলেন, “ঘটনাটি অত্যন্ত সংবেদনশীল ও মর্মান্তিক। শুরু থেকেই আমরা গুরুত্বের সাথে বিষয়টি তদন্ত করেছি। তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার ও উদ্ধারকৃত আলামত বিশ্লেষণ করে আমরা প্রকৃত অপরাধীকে শনাক্ত করতে সক্ষম হই। আইনের ঊর্ধ্বে কেউ নয়, এ ধরনের নৃশংস অপরাধের বিরুদ্ধে আমাদের জিরো টলারেন্স নীতি অব্যাহত থাকবে।” বর্তমানে মামলার পরবর্তী আইনানুগ প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
কিশোর অপরাধের এই করুণ পরিণতি স্থানীয় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।
2025 © জনপদ সংবাদ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
প্রয়োজনে যোগাযোগঃ ০১৭১২-০৬৮৯৫৩