বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:০৪ অপরাহ্ন
মোতাহের উদ্দিন, চবি প্রতিনিধিঃ
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) সাম্প্রতিক উত্তেজনাকর পরিস্থিতি নিয়ে পাল্টাপাল্টা বিবৃতি দিয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) ও চবি শাখা ছাত্রদল। চাকসু তাদের বিবৃতিতে ভিপির প্রতি হামলার চেষ্টা ও গালিগালাজের ঘটনার তীব্র নিন্দা জানালেও ছাত্রদল তাদের যৌক্তিক আন্দোলনে বাধা ও হামলার জন্য ছাত্রশিবিরকে দায়ী করেছে।
মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) রাতে চাকসুর সাধারণ সম্পাদক সাঈদ বিন হাবিব এবং চবি শাখা ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক আবু হাসনাত মো. রুকনুদ্দিন স্বাক্ষরিত পৃথক বিবৃতিতে এ অবস্থান জানানো হয়।
চাকসুর বিবৃতিতে বলা হয়, সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) প্রশাসনিক ভবনে ছাত্রদলের তালা ঝোলানো ইস্যুর সমাধানের লক্ষ্যে চাকসু নেতৃবৃন্দ সেখানে গেলে ছাত্রদল নেতাকর্মীদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে ছাত্রদল সেক্রেটারি আব্দুল্লাহ আল নোমান চাকসু ভিপিকে উদ্দেশ্য করে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। ২৮ হাজার শিক্ষার্থীর নির্বাচিত প্রতিনিধির প্রতি এমন আচরণ দেশের ছাত্ররাজনীতির জন্য চরম লজ্জাজনক উল্লেখ করে চাকসু এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায়।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ঘটনার প্রতিবাদ জানানোর পরদিন মঙ্গলবার মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তব্য প্রদানকালে চাকসুর ভিপি ইব্রাহিম হোসেন রনির দিকে শাখা ছাত্রদল সভাপতি আলাউদ্দিন মহসিন আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে তেড়ে আসেন এবং ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেন। একটি ছাত্রসংগঠনের শীর্ষ নেতার কাছ থেকে এমন আচরণ নিন্দনীয় বলেও উল্লেখ করা হয়।
অন্যদিকে ছাত্রদলের বিবৃতিতে দাবি করা হয়, উপ-উপাচার্যের বক্তব্যকে কেন্দ্র করে চলমান ঘটনায় শিক্ষার্থীরা প্রত্যাশা করেছিল চাকসু সরাসরি বিবৃতি দিয়ে তাদের যৌক্তিক আন্দোলনের পাশে দাঁড়াবে। কিন্তু ঘটনার ৩০ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও চাকসুর পক্ষ থেকে কোনো অবস্থান না আসায় ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। বরং প্রশাসনের মদদে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে বাধা দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়।
ছাত্রদলের বিবৃতিতে আরও অভিযোগ করা হয়, আন্দোলন চলাকালে ছাত্রশিবির নেতাকর্মীরা প্রশাসনিক ভবনের আশপাশে সড়ক অবরোধ করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের চলাচলে বাধা দেন এবং আন্দোলনকারীদের ওপর শারীরিক হামলা চালান। এ সময় নারী সাংবাদিকদের হেনস্তা, অশ্রাব্য গালিগালাজ ও উসকানিমূলক স্লোগানের ঘটনাও ঘটে বলে দাবি করা হয়।
বিজয় দিবসের আলোচনা সভা প্রসঙ্গে ছাত্রদল জানায়, সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবি ছিল উপ-উপাচার্যের নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা ও পদত্যাগ। কিন্তু তাকে মঞ্চে উপস্থিত দেখে বাংলাদেশপন্থি শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়। সভাস্থলে প্রবেশের সময় ছাত্রশিবির বাধা দিলে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। একপর্যায়ে ছাত্রদলসহ বিভিন্ন সংগঠন আলোচনা সভা বর্জন করতে বাধ্য হয়।
বিবৃতিতে উপ-উপাচার্যের বক্তব্যের জন্য নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা ও পদত্যাগ দাবি করে ছাত্রদল হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে জানায়, শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আন্দোলনে সন্ত্রাসী কায়দায় বাধা সৃষ্টি করা হলে দায়ীদের কঠোর পরিণতি ভোগ করতে হবে।
2025 © জনপদ সংবাদ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
প্রয়োজনে যোগাযোগঃ ০১৭১২-০৬৮৯৫৩