সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৪:৩০ পূর্বাহ্ন
আবু তাহের, নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিঃ
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে যথাযোগ্য মর্যাদায় শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস ২০২৫ পালিত হয়েছে।
রবিবার (১৪ ডিসেম্বর) নতুন প্রশাসনিক ভবনের সামনে কালো ব্যাজ ধারণ করে জাতীয় সঙ্গীতের সঙ্গে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম এবং কালো পতাকা উত্তোলন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর ড. জয়নুল আবেদীন সিদ্দিকী।
এরপর শহীদ বুদ্ধিজীবীদের গভীর শ্রদ্ধা জানাতে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের পক্ষ থেকে ‘চির উন্নত মম শির’-এ পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম। পরে হল প্রভোস্ট ও শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকেও পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে পুরাতন প্রশাসনিক ভবনের কনফারেন্স কক্ষে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভার শুরুতে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা হয়। আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম।
শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘আজ ১৪ ডিসেম্বর—শোকের দিন। ৫৪ বছর আগে চূড়ান্ত বিজয়ের মাত্র দুই দিন আগে এ দেশের সূর্যসন্তানদের নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। তবে দীর্ঘ নয় মাসব্যাপী দেশের বিভিন্ন স্থানে যার যার ক্ষেত্রে যোগ্য ব্যক্তিদের এ দেশের দোসর ও আন্তর্জাতিক সহায়তায় নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমাদের সেই ক্ষত এখনো পূরণ হয়নি। সেইসব বুদ্ধিজীবী বেঁচে থাকলে দেশ আরও এগিয়ে যেত। তবে বিভাজন ও অনৈক্য এখনো সমাজে বিরাজমান। আমরা আমাদের বিবেক হারিয়ে ফেলেছি। আমরা শুধু ধনী হওয়ার প্রতিযোগিতায় মেতে উঠেছি। এখন সমাজে প্রতিষ্ঠা লাভ মানেই যেকোনো উপায়ে ধনী হওয়া। আমাদের পরিবারও সন্তানদের শিক্ষা শেষে কীভাবে বেশি আয়ের একটি চাকরি অর্জন করা যাবে—সেই চিন্তায় মগ্ন। আমাদের বিবেকবোধ জাগ্রত করে সামাজিক ও রাজনৈতিক উন্নয়ন হলেই সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে।’
প্রধান অতিথি আরও বলেন, ‘শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রকৃত সংখ্যা এখনো নির্ধারণ করা সম্ভব হয়নি। এ পর্যন্ত চারবার তালিকা প্রকাশ করেও সঠিক সংখ্যা নির্ণয় করা যায়নি। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী শহীদ বুদ্ধিজীবীদের সংখ্যা ৫৬০ জন। যারা এই নির্মম হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিল, তাদের চিহ্নিত করে বিচারের মাধ্যমে শাস্তি প্রদানের আহ্বান জানাচ্ছি।’ বাংলাদেশ যতদিন থাকবে, শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস ততদিন থাকবে উল্লেখ করে মাননীয় উপাচার্য বলেন, শহীদ বুদ্ধিজীবীদের চেতনা ধারণ করে বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে পারলেই আমরা তাঁদের আত্মত্যাগকে সার্থক করে তুলতে পারব।
আলোচনা অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর ড. জয়নুল আবেদীন সিদ্দিকী এবং ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. সাখাওয়াত হোসেন সরকার। স্বাগত বক্তব্য রাখেন রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর ড. মো. মিজানুর রহমান। আলোচনা অনুষ্ঠানে সভাপতি হিসেবে বক্তব্য রাখেন শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক ও বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. এ এইচ এম কামাল।
আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. তুষার কান্তি সাহা এবং দোলন-চাঁপা হলের প্রভোস্ট উম্মে ফারহানা। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন অগ্নি-বীণা হলের প্রভোস্ট মো. হারুনুর রশিদ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর, হলের প্রভোস্ট, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীবৃন্দ।
2025 © জনপদ সংবাদ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
প্রয়োজনে যোগাযোগঃ ০১৭১২-০৬৮৯৫৩