রবিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:২৫ অপরাহ্ন
মোতাহের উদ্দিন, চবি প্রতিনিধিঃ
১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের শেষ প্রান্তে দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মরণে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) যথাযোগ্য মর্যাদা ও গভীর শ্রদ্ধায় পালিত হয়েছে ৫৪তম শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস।
রবিবার (১৪ই নভেম্বর) দিনব্যাপী পুষ্পার্ঘ্য অপর্ণ,শোকরযালি ও আলোচনার মাধ্যমে দিবসটি পালন করা হয়।
এদিন সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ভবনে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত এবং কালো পতাকা উত্তোলিত হবে। বাদ ফজরের নামাজের বিশ্ববিদ্যালয়ের মসজিদ ও অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়ে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মার শান্তি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত ও প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হবে। একই সঙ্গে কালো ব্যাজ ধারণের করে। এদিকে, সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পার্ঘ্য অপর্ণের এরপর বুদ্ধিজীবি স্মৃতিসৌধ থেকে শহীদদের স্মরণে শোকরযালি বুদ্ধিজীবি স্মৃতিসৌধ থেকে পুরাতন কলা ও মানববিদ্যা অনুষদ প্রদক্ষিণ করে প্রশাসনিক ভবনের সামনে এসে শেষ হয়।
সকাল ১১টায় উপাচার্য দপ্তরের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা।
এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান। সভাপতিত্ব করেন উপ-উপাচার্য (প্রশাসনিক) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন। সভায় প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ড. মোহাম্মদ জাহিদুর রহমান। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, চাকসু ও বিভিন্ন হল সংসদের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনা সভায় চাকসুর সহ-সভাপতি ইব্রাহীম হোসেন রনি বলেন, শুধু আনুষ্ঠানিক আয়োজনের মধ্য দিয়ে ১৯৭১ সালের শহীদ বুদ্ধিজীবীদের অবদান যথাযথভাবে স্মরণ করা সম্ভব নয়। দেশের জন্য তাঁদের অবদান ছিল অপরিসীম। তিনি শিক্ষার্থীদের মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানার সুযোগ তৈরিতে প্রশাসনের সহযোগিতা ও উৎসাহের আহ্বান জানান।
উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান বলেন, যাঁদের ত্যাগের বিনিময়ে আমরা স্বাধীন ভূখণ্ড পেয়েছি, আজ তাঁদের গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি। তাঁর মতে, পাকিস্তানি বাহিনীর দেশত্যাগের ঠিক আগে বুদ্ধিজীবীদের পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডের পেছনে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা প্রয়োজন। তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে জাতির সামনে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের অবদান সঠিকভাবে তুলে ধরতে একটি কমিটি গঠনের আহ্বান জানান।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় বুদ্ধিজীবীরা তাঁদের জ্ঞান ও চিন্তার আলো দিয়ে জাতিকে পথ দেখিয়েছেন। তবে বর্তমান সময়ের অনেক বুদ্ধিজীবী তাঁদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করছেন না। সমাজের এই সংকটময় অবস্থা থেকে উত্তরণে বুদ্ধিজীবীদের সক্রিয় ও সাহসী ভূমিকা অপরিহার্য বলে তিনি মন্তব্য করেন।
সভাপতির বক্তব্যে উপ-উপাচার্য (প্রশাসনিক) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন বলেন, বুদ্ধিজীবীদের ত্যাগ ও অবদান অনুযায়ী তাঁদের যথাযথ মূল্যায়ন করা হচ্ছে না। ইতিহাসে দেখা যায়, সক্রেটিস ও গ্যালিলিওর মতো সত্যভাষীদের জীবন দিতে হয়েছে, আর ক্ষমতার তোষামোদকারীরা নিরাপদ থেকেছে। তিনি বলেন, বর্তমান সময়ের বুদ্ধিজীবীদের অনেকেই পেশাগত নিরাপত্তাকে দায়িত্ববোধের চেয়ে বেশি গুরুত্ব দেন। তাই বুদ্ধিজীবী চেতনা জাগ্রত রাখতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যেই এর চর্চা গড়ে তুলতে হবে।
2025 © জনপদ সংবাদ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
প্রয়োজনে যোগাযোগঃ ০১৭১২-০৬৮৯৫৩