আবু তাহের, নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি:
সম্প্রতি প্রকাশিত ৪৫ তম বিসিএস পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফলে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪ শিক্ষার্থী।
শিক্ষার্থীরা হলেন- হিসাববিজ্ঞান ও তথ্যপদ্ধতি বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী রায়হান মারুফ; সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার, মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো: রুহুল আমিন; সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার, কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো: সুজন হোসাইন; শিক্ষা ক্যাডার (আইসিটি), মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের আরেক শিক্ষার্থী জুলফিকার রায়হান; সমবায় ক্যাডার।
নিজের অনুভূতি প্রকাশে রায়হান মারুফ বলেন, "এটি আমার তৃতীয় বিসিএস। তৃতীয় বিসিএস ভাইভায় দারুণ করেছি—রেকোমেন্ডেড হবো সেটা বুঝতেই পেরেছিলাম। রেজাল্টে স্ত্রী আমার রোল দেখে আনন্দে সবাইকে জানিয়েছে—‘সে বিসিএস ক্যাডার হয়েছে’। তার সেই উচ্ছ্বাস আমাকে আরও অনুপ্রাণিত করেছে। শিক্ষকতা পেশায় থেকে অনেকের জীবনে আলো ছড়াতে চাই।
আমার বিসিএস যাত্রা শুরু ৪১তম থেকে—সেখানে নন-ক্যাডার হয়েছিলাম। ৪৪তম বিসিএসেও নন-ক্যাডার, চয়েস লিস্ট দিয়েছে, রেজাল্ট আসবে ১০ ডিসেম্বর। শেষ পর্যন্ত ৪৫তম বিসিএসে শিক্ষা ক্যাডারে সুপারিশ পেয়েছি।"
শিক্ষা ক্যাডারে (আইসিটি) সুপারিশপ্রাপ্ত সুজন হোসাইন বলেন, "চাকরিপ্রস্তুতিতে বিসিএসই ছিল আমার প্রথম লক্ষ্য। পিএসসির রোডম্যাপ অনুযায়ী ১০ ডিসেম্বর ফল প্রকাশের কথা থাকলেও ২৬ তারিখ রাতেই হঠাৎ ফল প্রকাশ হয়। দীর্ঘ ভ্রমণের ক্লান্তিতে ঘুমাচ্ছিলাম, কিন্তু বন্ধুদের কলেই জানতে পারি ফল এসেছে। রোল নম্বর একে একে মিলিয়ে আইসিটি লেকচারার পদে নিজের রোল দেখতে পাওয়ার মুহূর্তটা ছিল অবিশ্বাস্য আনন্দের। উত্তেজনায় রাতভর ঘুম হয়নি। পরদিন ঘুমঘুম চোখেই ৪৭তম লিখিত পরীক্ষা দিতে হলে যাই। সব মিলিয়ে এটা ছিল অসাধারণ এক অনুভূতি।
৪৪তম বিসিএসে প্রথমবার অংশ নিয়ে প্রিলিতে কোয়ালিফাই করতে পারিনি। পরবর্তীতে আলহামদুলিল্লাহ ৪৫, ৪৬ ও ৪৭তম বিসিএসে প্রিলি কোয়ালিফাই করেছি।এ বছরের মার্চে প্রাইমারি স্কুলে যোগ দিই। পরে সোনালী ব্যাংকের অফিসার (ক্যাশ) ও অফিসার (আইটি) পদে সুপারিশ পাই। ৯ নভেম্বর মহেশখালী ব্রাঞ্চে ক্যাশ অফিসার হিসেবে যোগদান করেছি; আইটি নিয়োগপত্র এখনো পেন্ডিং।"
বিসিএস প্রত্যাশীদের জন্য পরামর্শ হিসেবে রায়হান মারুফ বলেন, "প্রিয় বিসিএস প্রত্যাশীরা —একটিমাত্র লক্ষ্যে সব আশা না রেখে যেখানে সুযোগ পাওয়া যায় সেখান থেকে ক্যারিয়ার শুরু করতে হবে। অভিজ্ঞতা নিতে নিতে নিজের স্বপ্নের পথে এগোতে হয়। জীবনে ‘উদ্দেশ্য’ ও ‘নিয়মানুবর্তীতা’ না থাকলে আজকের অতিরঞ্জিত বিজ্ঞাপনের যুগে সহজেই হতাশা আসতে পারে।"
সুজন হোসাইন বলেন, "বিসিএসে আসতে চাইলে সময় ব্যবস্থাপনা খুব গুরুত্বপূর্ণ। লাইব্রেরিতে পড়বেন নাকি আড্ডায়—এটা বোঝার ক্ষমতা না থাকলে টিকে থাকা কঠিন। পড়া ধীরে, বুঝে এবং মৌলিক বইয়ের ওপর ভিত্তি করে হবে। সপ্তাহে অন্তত ২ দিন রিভিশনের জন্য রাখবেন। তাড়াহুড়ো করে পরীক্ষার মতো পড়বেন না।"