মোঃ নাদিম শরীফ, ঝালকাঠি প্রতিনিধি:
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঝালকাঠি-১ (রাজাপুর–কাঁঠালিয়া) আসনে জামায়াতে ইসলামীর চূড়ান্ত মনোনয়ন পেয়েছেন সদ্য পদত্যাগ করা বিএনপির মালয়েশিয়া কমিটির সহ-সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক ড. ফয়জুল হক। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা জামায়াতের আমির অ্যাডভোকেট হাফিজুর রহমান।
ড. ফয়জুল হক ওলীয়ে কামেল হযরত কায়েদ সাহেব হুজুর (রহ.) এর নাতি। তিনি ১৯৮৭ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার পশ্চিম চাড়াখালী গ্রামের একটি সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বিশিষ্ট আলেমে দ্বীন মাওলানা মুজ্জাম্মিলুল হক রাজাপুরী হুজুরের সর্বকনিষ্ঠ সন্তান। চার ভাই ও দুই বোনের মধ্যে তিনি সবার ছোট। বড় ভাই অধ্যক্ষ মুহাম্মদ ছাইফুল হক, মেঝো ভাই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান ও সহযোগী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ শহীদুল হক এবং সেজো ভাই আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামের সহযোগী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আমিনুল হক।
পরিবারের সদস্যরা শিক্ষক, প্রিন্সিপাল ও ডক্টর হলেও ছোটবেলা থেকেই মানবসেবার ব্রত নিয়ে রাজনীতির পথ বেছে নেন ড. ফয়জুল হক। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগ থেকে বি.এ (অনার্স) ও এম.এ সম্পন্ন করেন। পরে ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ইউনিভার্সিটি মালয়েশিয়া থেকে ২০১৯ সালে পিএইচডি এবং ২০২৩ সালে পোস্ট-ডক্টোরাল ফেলোশিপ করেন। ২০১৩ সালে তিনি বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন ঝিনাইদহের কন্যা কাজী আফিফা খাতুনের সঙ্গে।
গত ১৬ বছর ধরে অন্যায়, জুলুম ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে তিনি সোচ্চার। অনলাইনে টকশো, লাইভ ও লেখালেখির মাধ্যমে সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে কাজ করে যাচ্ছেন। প্রবাসে থেকেও “জুলাই বিপ্লব” এর পক্ষে জনমত গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। এর পর গত ১২ জুলাই তিনি বিএনপি থেকে পদত্যাগ করে স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করার ঘোষণা দেন।
দাঁড়িপাল্লার মনোনয়ন পাওয়ার পর ড. ফয়জুল হক বলেন, তিনি আনন্দিত ও গর্বিত। তাঁর বিশ্বাস, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামের নেতৃত্বে ডা. শফিকুর রহমান প্রধানমন্ত্রী হবেন এবং দেশপ্রেমিক নেতৃত্বে সরকার গঠিত হবে। সেই সরকারের অংশ হতে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পেরে তিনি গৌরব অনুভব করছেন।
তিনি আরও বলেন, ঝালকাঠি-১ আসনের মানুষ সত্যের পক্ষে রায় দিতে প্রস্তুত। বিভিন্ন দল–মতের মানুষ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এবারের ভোট দাঁড়িপাল্লায় দেবেন।
এসময় তিনি কৃতজ্ঞতা জানান জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমানকে, যিনি কঠিন সময়ে তাঁকে মানসিক শক্তি জুগিয়েছেন এবং ফ্যাসিবাদ পতনের পর সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচন করার সুযোগ করে দিয়েছেন। পাশাপাশি ইসলামি আন্দোলনের আমির চরমোনাই পীর সাহেব, ছারছিনা, নেছারাবাদসহ সব পীর–মাশায়েখ, আলেম–ওলামা, কবি–সাহিত্যিক, সাংবাদিক, কৃষক–শ্রমিকসহ সবাইকে ধন্যবাদ জানান। তাঁর বিশ্বাস, সবাই মিলেই এমন এক বিপ্লব ঘটবে যা অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে দেবে।