মেহেরাব হোসেন, শিবচর (মাদারীপুর) প্রতিনিধি:
“সম্মিলিত প্রচেষ্টাই পারে গেম দিয়ে অবৈধভাবে ইউরোপে যাওয়ার প্রবণতা রোধ করতে। ইতালি যাওয়ার স্বপ্নে সাগরে ডুবে মারা যাচ্ছে কারো ভাই, কারো ছেলে—এই মৃত্যুযাত্রা যেকোনো মূল্যে আমাদের ঠেকাতে হবে।”
বুধবার (১৯ নভেম্বর ২০২৫) সকালে ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের উদ্যোগে আয়োজিত এক কর্মশালায় এমন মন্তব্য করেন মাদারীপুরের শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এইচ. এম. ইবনে মিজান।
উপজেলা পরিষদ সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত ‘নিরাপদ অভিবাসন ও টেকসই পুনরেকত্রীকরণ’ বিষয়ক এ কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন মাদারীপুরের ব্র্যাক জেলা সমন্বয়কারী মিতু রানী দেবনাথ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইউএনও আরও বলেন, “যারা বিদেশ যাবেন তারা যেন সঠিক তথ্য জেনে-বুঝে সিদ্ধান্ত নেন। অনিয়মিত পথে বিদেশ যেতে গিয়ে প্রতারণা, পাচার ও মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। পরিবার-সমাজের দায়িত্বশীলদের উচিত তরুণ সমাজকে অনিরাপদ অভিবাসন ও মানবপাচারের ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতন করা।”
কর্মশালার বিশেষ অতিথি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, “ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবির ঘটনায় প্রায়ই শিবচরের মানুষের মৃত্যুসংবাদ পাওয়া যায়। মানুষ সচেতন হলে অনেক অকাল মৃত্যু রোধ করা সম্ভব।”
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ফাতেমা মাহজাবিন, উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা বেল্লাল হোসেন, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রবীন্দ্রনাথ দত্ত, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা এবিএম সৌরভ রেজা শিহাব, উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা পূর্ণিমা কবিরাজ, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার মোঃ শহিদুল ইসলাম, উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোঃ আশফিকুর রহমানসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাগণ।
কর্মশালায় মাল্টা-ফেরত অভিবাসী মাহাতাব মৃধা ও আব্দুল হান্নান ইউরোপে নিঃস্ব হয়ে ফিরে আসার অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। তারা জানান, প্রত্যাশা-২ প্রকল্পের সহায়তায় তারা মনোসামাজিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক পুনরেকত্রীকরণের সুযোগ পেয়েছেন।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ব্র্যাকের যৌথ অর্থায়নে দেশের অভিবাসনপ্রবণ জেলাগুলোতে বাস্তবায়িত হচ্ছে ‘ইম্প্রুভড সাসটেইনেবল রিইন্টিগ্রেশন অব বাংলাদেশি রিটার্নি মাইগ্রেন্টস (প্রত্যাশা-২)’ প্রকল্প। কর্মশালা পরিচালনা করেন এমআরএসসি কো-অর্ডিনেটর জয় বনিক। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের রিজিওনাল এমআরএসসি কো-অর্ডিনেটর দেবানন্দ মন্ডল।
সভায় সরকারি কর্মকর্তা, বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধি, সাংবাদিক, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি, বিদেশ-ফেরত অভিবাসী ও তাদের পরিবারের সদস্যরা অংশগ্রহণ করেন।