নোমাইনুল ইসলাম, রাঙামাটি প্রতিনিধি:
২৯৯ নং রাঙামাটি সংসদীয় আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী ও জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট দীপেন দেওয়ান এর নেতৃত্বে আজ ১৮ নভেম্বর ২০২৫, মঙ্গলবার সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে জুরাছড়ি উপজেলার প্রধান বাজার যক্ষাবাজারের সাপ্তাহিক হাটে ব্যাপক গণসংযোগ, প্রচারপত্র বিতরণ, পথসভা ও স্থানীয় জনগণের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠিত হয়।
সাপ্তাহিক হাটের দিন হওয়ায় যক্ষাবাজারে সাধারণ মানুষের ব্যাপক উপস্থিতি BNP–এর এ কর্মসূচিকে রূপ দেয় এক অনন্য গণজাগরণে। হাটে ছিল মানুষের ঢল পথসভায় ভিড়ে ঠাঁই পাওয়া কঠিন
লোকজনের ভাষ্যমতে, সকাল থেকেই বাজারে মানুষের ভিড় চোখে পড়ে। পাহাড়ি গ্রামগুলো থেকে দল বেঁধে লোকজন নেমে আসতে থাকেন।
ত্রিপুরা, চাকমা, মারমা, তঞ্চংগ্যাসহ বিভিন্ন ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠীর মানুষের উপস্থিতিতে পুরো বাজার প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে। দোকানদার, কৃষক, হাটের ফুটপাত ব্যবসায়ী, নারীরা, তরুণরা সবাই ভিড় করেন ৩১ দফা শুনতে ও দীপেন দেওয়ানকে দেখতে।
হাটের এক কোণে হাতে ধানের শীষের লিফলেট নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা বৃদ্ধ চাকমা কৃষক বলেন,
“আমরা শুধু উন্নয়ন চাই, স্বাস্থ্য–শিক্ষা ভালো হোক। কে আমাদের কথা শুনবে—এই আশা নিয়ে এসেছি।”
উপজেলা বিএনপির সভাপতি অনিল বরণ চাকমা এর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক সাদন বিকাশ চাকমা এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, রাঙামাটি জেলা বিএনপির সহ সভাপতি সাইফুল ইসলাম চৌধুরী ভুট্টো, সহ সভাপতি শুশোভন দেওয়ান আগা, সহ সভাপতি বাবুল আলী, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক আলী বাবর, যুগ্ম সম্পাদক দেবোজ্যোতি চাকমা, সাংগঠনিক সম্পাদক শ্বাশত চাকমা রিংকু, জেলা বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. পরেশ খীসা, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক শিবলী শান্তি চাকমা, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মো. বাচ্চু মিয়া, জেলা জিয়া পরিষদের সভাপতি মানস মুকুর চাকমা, রাঙামাটি সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রনেল দেওয়ান, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর আলম তালুকদার, জেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক নাজিম উদ্দীন, জেলা জাসাসের সাধারণ সম্পাদক পটন চাকমাসহ জেলা ও উপজেলা বিএনপি অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
মঞ্চে উঠেই ডা. পরেশ খীসা, চাকমা ভাষায় বক্তব্য দিলে পুরো বাজারে নীরবতা নেমে আসে। সবাই মনোযোগ দিয়ে শোনেন। তিনি বলেন, “বিএনপি রাঙামাটিতে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে স্বচ্ছ নিয়োগ দিয়ে যোগ্যদের সুযোগ দিয়েছিল। কিন্তু গত ১৭ বছরের শাসনামলে এই দুই খাত সবচেয়ে বেশি বিপর্যস্ত হয়েছে। পাহাড়ে হাসপাতাল আছে কিন্তু ডাক্তার নেই, স্কুল আছে কিন্তু শিক্ষক নেই। জনগণ আজ হতাশ। তাই উন্নয়ন ফিরিয়ে আনতে দীপেন দেওয়ানকে ধানের শীষে ভোট দিন।”
বক্তারা বলেন, “এই জনপদের উন্নয়ন কাগজে থাকে, বাস্তবে আসে না। ৩১ দফা বাস্তবায়নের মধ্য দিয়েই পার্বত্য রাঙামাটি সত্যিকার উন্নয়নের পথে যাবে।”
দীপেন দেওয়ান মনোযোগ দিয়ে সবার কথা শোনেন এবং বলেন, “পাহাড়ের মানুষ শান্তিপ্রিয়, পরিশ্রমী। কিন্তু উন্নয়ন সুবিধা তাদের কাছে পৌঁছায় না। ৩১ দফা বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে আমরা পাহাড়ি বাঙালি সব সম্প্রদায়ের সমঅধিকার নিশ্চিত করবো। প্রতিটি দুর্গম গ্রামকে উন্নয়নের আওতায় আনবো।”
তিনি আরও বলেন, “রাঙামাটি জেলার প্রতিটি উপজেলায় চিকিৎসা, শিক্ষা, যোগাযোগ ও জীবনমান উন্নয়নে নির্দিষ্ট পরিকল্পনা থাকবে। আপনাদের ভোটই এই পরিবর্তনের ভিত্তি।”
পথসভা শেষে উপজেলা সদরে স্থানীয় বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, সামাজিক নেতৃবৃন্দ ও গুণীজনদের সাথে বিশেষ মতবিনিময় ও আলোচনা সভায় যোগ দেন দীপেন দেওয়ান।