আনোয়ারুল ইসলাম রনি, রংপুর প্রতিনিধি:
জুলাই–আগস্টে সংঘটিত গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। একই মামলায় দোষ স্বীকার করে রাজসাক্ষী হওয়ায় সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
রায় ঘোষণার পর জুলাই আন্দোলনের প্রথম শহীদ আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেন সন্তোষ প্রকাশ করেন।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) দুপুরে পীরগঞ্জের বাবনপুর গ্রামে ছেলের কবরের পাশে দাঁড়িয়ে তিনি এ প্রতিক্রিয়া জানান। রায় ঘোষণার খবর ছড়িয়ে পড়তেই এলাকাবাসী, জুলাই আন্দোলনের কর্মী এবং শহীদ পরিবারের সদস্যরা উল্লাসে ফেটে পড়েন ও মিষ্টি বিতরণ করেন।
মকবুল হোসেন বলেন, “রায় শুনে অবশ্যই ভালো লাগছে। তবে অন্য যেসব পরিবার আপনজন হারিয়েছে, তারাও যেন ন্যায়বিচার পায়। ভারত থেকে এনে খুব দ্রুত এই মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করলে আমার মন আরও শান্ত হবে। জীবদ্দশায় এটি দেখতে চাই। রায় ঘোষণা অন্তরের কিছুটা বোঝা কমিয়েছে, আর কার্যকর হলে পূর্ণ তৃপ্তি পাব।”
শহীদ আবু সাঈদ হত্যা মামলার বাদী ও বড় ভাই রমজান আলী বলেন, “শেখ হাসিনা ও তার সহযোগীরা যে দেশেই থাকুক, দ্রুত তাদের ফেরত এনে রায় কার্যকর করতে হবে। এতে শহীদদের আত্মা কিছুটা হলেও শান্তি পাবে। আহত ও নিহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে প্রধান উপদেষ্টার কাছে এটিই আমাদের প্রধান দাবি।”
আরেক ভাই আবু হোসেন মন্তব্য করেন, “রায় ঘোষণাই শেষ কথা নয়—এটি বাস্তবায়ন করাই মূল বিষয়। হাসিনাকে দেশে এনে এই রায় কার্যকর করতে হবে। গত ১৫ বছরে ফ্যাসিস্ট পদ্ধতিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক মতের লোকজনকে হত্যা করে দেশে একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠার চেষ্টা হয়েছিল। একজন শহীদের ভাই হিসেবে আমার একটাই প্রত্যাশা—রায় যেন দ্রুত কার্যকর হয়।”
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায় সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টায় ঘোষণা শুরু হয়। ৪৫৩ পৃষ্ঠার রায়টি ৬টি ভাগে সাজানো। ট্রাইব্যুনাল বলেছে—শেখ হাসিনাসহ তিনজন আসামির অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে, যার মধ্যে দুটি অভিযোগে শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, তিন আসামির মধ্যে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বর্তমানে পলাতক এবং ভারতেই অবস্থান করছেন।