মোঃ সোহাগ আহমেদ, কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি:
পটুয়াখালী জেলার মহিপুর থানা এলাকায় ডেঙ্গু পরিস্থিতি মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। ক্রমাগত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি মৃত্যুর ঘটনা স্থানীয় জনমনে উদ্বেগ ও আতঙ্ক তৈরি করেছে। এ অবস্থায় ডেঙ্গু প্রতিরোধে মাঠে নেমেছে স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরা।
সম্প্রতি ডেঙ্গুজনিত কারণে মোট ৯ জনের মৃত্যু নিশ্চিত হয়েছে। গত ১০ নভেম্বর (সোমবার) রাতে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা যান, মহিপুরের পরিচিত দর্জি,শ্রী শিশির দাস,আলীপুর কালাচাঁনপাড়া এলাকার রাখাইন ফার্মেসি ব্যবসায়ী,উবাচো,ও মহিপুরে কর্মরত এক পরিছন্নকর্মী। এর আগে আরও ৬ জনের মৃত্যু হওয়ায় মোট মৃতের সংখ্যা ৯-এ পৌঁছেছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, আক্রান্তের ক্রমবর্ধমান সংখ্যাও উদ্বেগজনক।
স্থানীয় প্রশাসন ও ইউনিয়ন পরিষদ ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে তৎপরতা শুরু করেছে। রবিবার (১৬ নভেম্বর) সকালে লতাচাপলী ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোগে বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ স্পটে মশার লার্ভা ধ্বংসে ফগার মেশিন ব্যবহার করে স্প্রে করা হয়।
এ সময় ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান হাওলাদার নিজেই ফগার মেশিন কাঁধে তুলে ফগিং কার্যক্রমে অংশ নেন।
মিজানুর রহমান হাওলাদার, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান, লতাচাপলী ইউনিয়ন পরিষদ বলেন, "ইউনিয়নবাসীর স্বাস্থ্য সুরক্ষাই আমাদের প্রধান দায়িত্ব। আমরা ফগিং কার্যক্রম শুরু করেছি এবং প্রয়োজনে প্রতিটি ওয়ার্ডে বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেব।"
কাউসার হামিদ, কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বলেন, "ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছি। ফগিং, লার্ভিসাইড ব্যবহার, জনসচেতনতা বৃদ্ধি, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচি এবং চিকিৎসা সেবাকে আমরা সমন্বিতভাবে পরিচালনা করছি। সবাইকে ঘরের আশপাশ পরিষ্কার রাখা, জমে থাকা পানি অপসারণ এবং রোগের লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত হাসপাতালে যোগাযোগ করার আহ্বান জানাচ্ছি।"
ডা. শংকর প্রসাদ অধিকারী, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা বলেন, "অনেকেই জ্বরকে সাধারণ অসুস্থতা মনে করে চিকিৎসা নিতে দেরি করছেন, যা অধিক ঝুঁকি তৈরি করছে। ডেঙ্গুর লক্ষণ দেখা দিলে অবহেলা না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।"