রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ০২:৫৩ পূর্বাহ্ন
চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধিঃ
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী ও তাঁর স্বজনদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে হোটেল ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান। বিএনপি নেতা ইমাম হোসেন রুবেলের প্রশ্রয়ে গ্রাম্য শালিশের সিদ্ধান্ত মানছে না তালাকপ্রাপ্ত ওই নারী রেহেনা আক্তার।
শুক্রবার চৌদ্দগ্রামে কর্মরত সাংবাদিকদের নিকট এমন অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী মিজানুর রহমান। তিনি উপজেলার উজিরপুর ইউনিয়নের সামুকশার গ্রামের মরহুম আবদুল কাদেরের ছেলে।
বিভিন্ন দপ্তরে দায়েরকৃত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের লালবাগ রাস্তার মাথায় খাবার হোটেল ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান ২০ বছর আগে সদর দক্ষিণ উপজেলার গজারিয়া গ্রামের মৃত আবদুল মালেকের মেয়ে রেহানা আক্তারকে বিয়ে করেন। দাম্পত্য জীবনে তাদের তিন সন্তান থাকলেও রেহেনা আক্তার পর-পুরুষের সাথে অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে।
একাধিক নিষেধ করার পরও সে অবৈধ কর্মকান্ড চালিয়ে যাওয়া এবং স্বামী মিজানুর রহমানকে অবহেলা করায় ২০২১ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি তাকে তালাক দেয়া হয়। এতে ক্ষীপ্ত হয়ে রেহেনা আক্তার, তার ভাই কামাল হোসেন, জামাল হোসেন ও স্থানীয় বিএনপি নেতা ইমাম হোসেন রুবেলসহ কয়েকজন তাকে প্রাণে হত্যার হুমকি দেয়।
এছাড়া রেহেনা আক্তার ২০২৩ সালের ২০ ডিসেম্বর কুমিল্লার আদালতে একটি মামলা দায়ের করলে আদালত সেটি খারিজ করে দেয়। এরই জের ধরে রেহেনা আক্তার নিজ বাবার বাড়িতে না গিয়েই স্বামীর জায়গায় নতুন বিল্ডিং ঘর নির্মাণ করছে। বিএনপি নেতা ইমাম হোসেন রুবেলসহ স্থানীয় প্রভাবশালী মহলের প্রশ্রয়ে রেহেনা আক্তারকে সরানো যাচ্ছে না।
গত ৭ এপ্রিল বিকেলে মিজানুর রহমান দোকান থেকে বের হয়ে বাড়ির সামনের রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় পূর্ব পরিকল্পিতভাবে তাঁর উপর হামলা করে ঘরের ভিতরে নিয়ে যায় রেহেনা আক্তারসহ তাঁর স্বজনরা। তারা ইটের আদলা, লাঠি ও লোহার রড দিয়ে এলোপাথারী আঘাতে মিজানুর রহমানের দাঁত, মুখমণ্ডল সহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে।
এ সময় তারা জোরপূর্বক খালি স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করতে মিজানুর রহমানকে বাধ্য করে। এক পর্যায়ে রাতে খবর পেয়ে চৌদ্দগ্রাম থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মিজানুর রহমানকে উদ্ধার শেষে হাসপাতালে পাঠায়। বিষয়টি সামাজিকভাবে মিমাংশার চেষ্টা করলেও রেহেনা আক্তার ও তাঁর স্বজনরা রাজি হয়নি। এর আগে একাধিকবার শালিশ বৈঠকে রেহেনা আক্তারকে মিজানুর রহমানের বাড়ি ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হলেও বিএনপি নেতা ইমাম হোসেন রুবেলের প্রশ্রয়ে তা মানছে না।
এ ব্যাপারে বিএনপি নেতা ইমাম হোসেন রুবেল বলেন, ‘রেহেনা আক্তার আমার আত্মীয়। জনগণের প্রতিনিধি হিসেবে রেহেনা আক্তারের বাড়িতে বিভিন্ন সময় শালিশ বৈঠকে গিয়েছি। এরই জের ধরে আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করতে আ’লীগের কামাল ও যুবলীগের হোসেনের নেতৃত্বে মিজানুর রহমানসহ একটি পক্ষ উঠেপড়ে লেগেছে। তাছাড়া আমার বিরুদ্ধে দেয়া অভিযোগ সঠিক নয়’।
অভিযোগের বিষয়ে তালাকপ্রাপ্ত রেহেনা আক্তার বলেন, ‘আমার জায়গায় ঘর নির্মাণ করছি। মিজানুর রহমানের কোন অভিযোগ সত্য নয়। শালিশ বৈঠকে হেরে গিয়ে সে আমার আত্মীয় ইমাম হোসেন রুবেলের নামে অপবাদ দিচ্ছে’।
2025 © জনপদ সংবাদ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
প্রয়োজনে যোগাযোগঃ ০১৭১৫-১২৫২৪৩