রবিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮:২৬ অপরাহ্ন
মো: সোহেল রানা, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি:
দেশে কোরআন ও সুন্নাহর বাইরে কোনো আইন প্রণয়ন করতে দেওয়া হবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, একটি মহল বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে যে আমরা নাকি কোরআন ও সুন্নাহভিত্তিক আইন চাই না। বাস্তবতা হলো—বিএনপি সবসময় কোরআন ও সুন্নাহর আদর্শের মধ্যেই থাকতে চায়।
রবিবার (২৮ ডিসেম্বর) দুপুরে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার মানব কল্যাণ পরিষদ চত্বরে জেলার আলেম ওলামাগণের সাথে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, ইসলাম শান্তির ধর্ম, আর আমরা শান্তি চাই। এই নির্বাচনের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চাই। আমাদের সম্পর্কে নানা অপপ্রচার চালানো হচ্ছে, ভুল বোঝানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। এদেশের শতকরা ৯০ ভাগ মানুষ মুসলমান, আর সকলের ধর্মীয় মূল্যবোধ ও সংস্কৃতি রক্ষায় বিএনপিই সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করেছে।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, দেশ এখন একটি ক্রান্তিকালের মধ্য দিয়ে অতিক্রম করছে। বিভ্রান্তি, আন্দোলনসহ বিভিন্নভাবে দেশে অস্থিরতা সৃষ্টির জন্য পিছন থেকে অপশক্তি কাজ করছে। এসব ষড়যন্ত্র সম্পর্কে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে, যাতে কেউ চক্রান্তে পা না দেয়।
মহাসচিব বলেন, আসন্ন নির্বাচনে জনগণ নির্ধারণ করবে আগামী পাঁচ বছর দেশ কে পরিচালনা করবে। এই নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ বিগত ১৫ বছরে দেশের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংস করা হয়েছে। দেশের অর্থনীতি ভেঙে দেওয়া হয়েছে, ব্যাংক লুট করে টাকা বিদেশে পাচার করা হয়েছে। সামগ্রিকভাবে দেশের মানুষকে বঞ্চিত করা হয়েছে। তারা তাদের ক্ষমতা চিরস্থায়ী করার লক্ষ্যে এমন সব আইন পাস করা হয়েছে, যার কারণে মানুষ কথা বলার অধিকার হারিয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলোর পাশাপাশি আলেম-ওলামাদের গ্রেপ্তার, নির্যাতন এমনকি ফাঁসি দেওয়া হয়েছে। ওসমান হাদিকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে, অথচ তার দাবি ছিল যৌক্তিক।
২৪-এর গণঅভ্যুত্থানের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রায় দুই হাজার শিক্ষার্থীকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে, ঢাকা শহর রক্তে রঞ্জিত হয়ে গিয়েছিল।
তিনি আরো বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় ছয় বছর কারাগারে আটক রাখা হয়। কারাগারে তার যথাযথ চিকিৎসা ও মানবিক পরিবেশ নিশ্চিত করা হয়নি।
ইতিহাস তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, শেখ মুজিবুর রহমানের শাসনামলে ইসলাম নিয়ে কথা বলার সুযোগ ছিল না। পরবর্তীতে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান সর্বপ্রথম ওলামায়ে কেরামকে সামনে এগিয়ে আনেন এবং মুসলিম উম্মাহর ঐক্য প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেন।
আসন্ন নির্বাচনের ইশতেহার নিয়ে তিনি বলেন, বিএনপি নির্বাচিত হলে সারা দেশের মসজিদের ইমাম, খতিব ও মুয়াজ্জিনদের সামাজিক মর্যাদা ও জীবনমান উন্নয়নে মাসিক সম্মানী প্রদান করা হবে। ধর্মীয় উৎসবে বিশেষ ভাতা দেওয়া হবে এবং দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে। এছাড়া ১৯৯৩ সালে বিএনপি সরকারের প্রণীত মসজিদ শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম সারাদেশে পুনরায় নিশ্চিত করা হবে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সভাপতি মির্জা ফয়সল আমীন, সাধারণ সম্পাদক পয়গাম আলীসহ ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার বিভিন্ন মসজিদ ও মাদ্রাসার আলেম-ওলামাগণ।
2025 © জনপদ সংবাদ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
প্রয়োজনে যোগাযোগঃ ০১৭১২-০৬৮৯৫৩