সোমবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৫, ০৬:৪২ অপরাহ্ন
সৈয়দ মাকসুমুল হক চৌধুরী সিয়াম, মোহনগঞ্জ (নেত্রকোণা) প্রতিনিধিঃ
নেত্রকোণার মোহনগঞ্জে বেলায়েত হোসেন নামে এক ব্যক্তি দুই রাজনৈতিক দল—বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর—দায়িত্বশীল পদে রয়েছেন বলে জানা গেছে। বিষয়টি জানাজানি হতেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে। উভয় দলই এই ঘটনাকে নিজেদের মতো ব্যাখ্যা করছে, যা বিতর্ককে আরও ঘনীভূত করেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বেলায়েত হোসেন সমাজ সহিলদেও ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। একই সঙ্গে তিনি ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সহসভাপতি পদেও রয়েছেন। তিনি জয়পুর গ্রামের তাহের উদ্দিনের ছেলে।
বিএনপি সূত্র জানায়, বেলায়েত দীর্ঘদিন দলের সঙ্গে যুক্ত। ২০২১ সালের ১৫ নভেম্বর অনুমোদিত ওয়ার্ড কমিটিতে তিনি সহসভাপতি হিসেবে স্থান পান। এর আগে তিনি কয়েক বছর সদস্য ছিলেন। গত ১৯ জুন ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি পদে উপনির্বাচনে কাউন্সিলর হিসেবেই ভোট দেন তিনি। দলের নেতারা বলছেন, বেলায়েতের জামায়াতে সম্পৃক্ত থাকার খবর কয়েক মাস ধরে তাঁদের জানা ছিল, তবে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
এ বিষয়ে জামায়াতের দাবি ভিন্ন। সমাজ সহিলদেও ইউনিয়ন জামায়াতের সভাপতি মাহফুজুর রহমান বলেন, বেলায়েত ২০২০ সাল থেকেই তাঁদের সাধারণ সম্পাদক। আগে তিনি বিএনপি করতেন। ২০১৯ সালে তাঁকে পুলিশ গ্রেপ্তার করলে বিএনপি কোনো সহযোগিতা না করলেও জামায়াত আইনি সহায়তাসহ সব ধরনের সহযোগিতা দেয়। এই কারণেই বেলায়েত জামায়াতে যোগ দেন।
ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি নান্নু মিয়া বলেন, বেলায়েত দীর্ঘদিন বিএনপিতে সক্রিয় ছিলেন এবং ২০২১ সালে নতুন কমিটিতে সহসভাপতি হন। পরে শুনেছেন তিনি জামায়াতের সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন। তিনি বলেন, দলীয় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী বেলায়েতের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।
নিজের অবস্থান সম্পর্কে বেলায়েত হোসেন জানান, ২০২১ সাল থেকে তিনি জামায়াতে সক্রিয়। যদিও বিএনপি থেকে নাম কাটাতে মৌখিকভাবে বলেছিলেন, লিখিতভাবে জানাননি। তাঁর দাবি, তাঁকে এখনও বিএনপির তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়নি। তিনি আরও বলেন, গত ১৯ জুনের উপনির্বাচনে তিনি ভোট দেননি, শুধু নির্বাচন পর্যবেক্ষণে গিয়েছিলেন।
ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জামাল উদ্দিন বলেন, এতদিন তারা বেলায়েতকে বিএনপির নেতা হিসেবেই চিনতেন। সম্প্রতি জানা গেছে, তিনি জামায়াতের পদেও রয়েছেন। উপজেলা কমিটির সঙ্গে কথা বলে তাঁর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঘটনাটি এলাকায় রাজনৈতিক অস্বস্তি তৈরি করেছে। সাধারণ কর্মীরা বলছেন, দুই দলের দায়িত্বে থাকা একজন নেতার উপস্থিতি সংগঠনের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়েই প্রশ্ন তোলে। তদন্ত ও দলীয় সিদ্ধান্ত এখন সবার নজরে।
2025 © জনপদ সংবাদ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
প্রয়োজনে যোগাযোগঃ ০১৭১২-০৬৮৯৫৩